বাঁশখালীর চেঁচুরিয়া কালীপুর চাম্বলে নির্বিঘ্নে পাহাড় সাবাড়
চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় সরকারি পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে ভূমিদস্যুরা। এসব মাটি ব্যবহার হচ্ছে বসতবাড়ির ভিটে ভরাট ও ইটভাটায় ইট তৈরির কাজে। এভাবে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির কারণে পরিবেশের ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়ছে। ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য।
জানা যায়, প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই পাহাড়মুখী হয়ে পড়ে অবৈধ ড্রাম ট্রাক। স্কেভেটর দিয়ে ড্রামট্রাকভর্তি করে ৩ হাজার টাকা দরে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এ সমস্ত ট্রাক রাত নামতেই পাহাড়ের ভিতর ঢুকে পড়ে। রাতভর মাটি পরিবহনের কাজ সেরে ভোর হতেই ট্রাকগুলো চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বাঁশখালীর পাহাড়ি এলাকায় সরেজমিনে পাহাড় কাটার দৃশ্য চিহ্নিত করা গেছে। এদিকে গত ২৪ জানুয়ারি উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অবৈধভাবে পাহাড় কাটা, বালু উত্তোলন ও বন বিভাগের গাছ কাটার ব্যাপারে আলোচনায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবুও থেমে নেই ভূমিদস্যু চক্রের অপতৎপরতা।
অভিযোগ রয়েছে, বাঁশখালীতে শতাধিক নাম্বারবিহীন অবৈধ ড্রামট্রাক চলাচল করছে সড়কপথে। এসব ট্রাকের ডকুমেন্ট না থাকা সত্ত্বেও বাঁশখালী ট্রাফিক পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় অবৈধ যানবাহনগুলো সড়ক পথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কালীপুর ইউনিয়নের জঙ্গল গুণাগরীর নিমতলায় দুটি পাহাড় ভূমিদস্যুরা চুক্তিভিত্তিক দখলে নিয়ে স্কেভেটর দিয়ে মাটি কেটে বিক্রি করছে। একইভাবে বৈলছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব চেঁচুরিয়ার ধুইল্যাঝিরি নামক স্থানে দুটি পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে ভূমিদস্যু চক্র। চাম্বল ইউনিয়নের পূর্ব চাম্বল বড় বিল ও সত্তরজ্জাকাটা এলাকায়ও দুটি পাহাড় স্কেভেটর দিয়ে কেটে একইভাবে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে দিনের পর দিন নির্বিচারে পাহাড় কাটা হলেও পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগসহ প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই। যে কারণে ভূমিদস্যুরা ব্যাপক উৎসাহের সাথে পাহাড়কাটা অব্যাহত রেখেছে।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, পাহাড় কাটার সংবাদ পেয়ে পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করলেও পুলিশের উপস্থিতি টের পেলে পাহাড়খেকো চক্র সটকে পড়ে। যার কারণে তাদের আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, বাঁশখালীর চাম্বলে পাহাড় কাটার খবর পেয়ে পূর্বে মামলা করা হয়েছিল। নতুন করে পাহাড় কাটার ব্যাপারে অভিযোগ পাইনি। চেচুরিয়া, কালীপুর ও চাম্বলের পাহাড় কাটার ব্যাপারে নতুনভাবে জানলাম। পাহাড় কাটায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে মামলা দায়ের করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার সংবাদ পেয়ে অভিযান পরিচালনা করলেও ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায় না। যে কারণে ভূমিদস্যুদের আইনের আওতায় আনা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে।