বাবা-ছেলের বয়সের ব্যবধান ৩ বছর ৯ মাস, এও কি সম্ভব?
বাবার জন্ম তারিখ ১৯৬১ সালের ২২ জুলাই। আর ছেলের জন্ম তারিখ ১১ মে ১৯৬৫। অর্থাৎ বাবার চেয়ে মাত্র ৩ বছর ৯ মাস ২০ দিন ছোট ছেলে! এও কি সম্ভব?
জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী, চট্টগ্রামের আনোয়ারার বারখাইন ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মোহাং সালাম প্রকাশ জমির উল্লাহ ১৯৬১ সালের ২২ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। অন্যদিকে এনআইডি অনুযায়ী, মোহাং সালাম প্রকাশ জমির উল্লাহ’র ছেলে পরিচয় দেওয়া মোহাম্মদ সিরাজ উল্লাহ’র জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ১১ মে।
বাবা-ছেলের বয়সের ব্যবধান ৩ বছর ৯ মাস ২০ দিন কীভাবে সম্ভব. সেই প্রশ্ন তুলে আজ শুক্রবার চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার টানেল রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মো. নাসির উদ্দীন নামের এক ব্যক্তি।
নাসির উদ্দীন নিজেকে মোহাং সালাম প্রকাশ জমির উল্লাহ’র ভাই পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘আমার ভাই মোহাং সালাম প্রকাশ জমির উল্লাহ ছিলেন ওষখাইন দরবার শরীফের পীরের সাগরিদ। ১৯৯২ সালের মার্চ মাসে আমার ভাইয়ের মুত্যুর পর সিরাজ উল্লাহ আমার ভাইয়ের মাজারের খাদেম হিসেবে খেদমত করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ১৯৯২ সালের শেষের দিকে তিনি আমার বড় ভাইয়ের শালিকে বিবাহ করে সংসার জীবন শুরু করেন। তাহলে সম্পর্ক দাঁড়ায়, সিরাজ আমার বড় ভাইয়ের ভাইরা ভাই। সিরাজের বাড়ি বরুমছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে। তার বাবার নাম কালা মিয়া।’
নাসির উদ্দীন আরও বলেন, ‘বর্তমানে প্রতারণা করতে আমার বড় ভাইয়ের মৃত ছেলের নাম ধারণ করে সিরাজ উল্লাহ এনআইডি বানিয়েছেন। এনআইডিতে আমার ভাইকে নিজের বাবা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে সিরাজ উল্লাহর বাবার নাম কালা মিয়া। তার বাড়ি বরুমছড়ায়।’
‘এনআইডিতে সিরাজ লিখেছেন তার জন্ম তারিখ ১৯৬৫ সালের ১১ মে। অথচ আমার ভাইয়ের ১৯৬১ সালের ২২ জুলাই। তাহলে কি ৩ বছর ৯ মাস বয়সে আমার ভাই সিরাজের মাকে বিয়ে করেছেন?’ প্রশ্ন রাখেন নাসির উদ্দীন।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, জমির উল্লাহর মাজারের নিয়ন্ত্রণ নিতে মোহাং সালাম প্রকাশ জমির উল্লাহর ছেলের মিথ্যা পরিচয়ে এনআইডি নিয়েছেন সিরাজ উল্লাহ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. হেফাজ উদ্দিন, মোহাম্মদ হাসেম উদ্দিন, মো. জালাল উদ্দীন, মো. ফরিদুল আলম, মো. নুরুল্লাহ্ প্রকাশ নুরুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে করা অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত মো. সিরাজ উল্লাহকে কল করা হলে তার ছেলে পরিচয়ে মো. ফরহাদ নামের একজন কথা বলেন। সরল স্বীকারোক্তি দিয়ে তিনি বলেন, ‘আব্বু (মো. সিরাজ উল্লাহ) জমির উল্লাহর পালকপুত্র। তাই এনআইডিতে এই নাম দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমার দাদার নাম কালা মিয়া।’ সরল স্বীকারোক্তি
ফরহাদ আরও বলেন, ‘জমির উল্লাহর মৃত্যুর পর তার বাবা মো. শফি আমার আব্বুর (সিরাজ উল্লাহ) নামে কিছু জায়গা দানপত্র করে গেছেন। জমির উল্লাহর মৃত্যুর পর আমার আব্বু ওনার মাজার করেন। প্রতিবছর ওরশ করে ওনার (জমির উল্লাহ) ভাইদের বিরানির ডেকসিও পাঠাতাম। কিন্তু কয়েক বছর ধরে ওনারা আমাদের পিছনে লেগে আছেন।’
জমির উল্লাহ মৃত্যুকালীন তার বাবা মো. শফি বেঁচে ছিলেন। সিরাজ উল্লাহর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, জমির উল্লাহর বাবা সিরাজকে দানপত্র করে দিয়ে গেছেন জমির উল্লাহর ছেলে হিসেবে। সেটাতে সিরাজ উল্লাহ থাকছেন। মাজার করেছেন পাশে।