জাতীয়

বিজিএমইএ’র সিদ্ধান্ত মেনে কাজে যোগ দিয়েছেন গাজীপুরের শ্রমিকেরা

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সিদ্ধান্ত মেনে গাজীপুরে তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দিয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার সকাল থেকে এসব কারখানায় কাজে যোগ দিয়েছেন শ্রমিকেরা। অপ্রীতিকর ঘটনা ও সহিংসতা ঠেকাতে বাড়তি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছে।

ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে গত ২৩ অক্টোবর থেকে আন্দোলনে নামেন শ্রমিকেরা। গাজীপুরের মৌচাকের তেলির চালা এলাকা থেকে শুরু হওয়া শ্রমিক আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়। কোনাবাড়ি, মৌচাক, সফিপুর, চন্দ্রা, কালিয়াকৈর, ভোগড়া বাইপাস সড়ক, বাসন সড়ক, চান্দনা চৌরাস্তা, তেলিপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় শ্রমিক বিক্ষোভ থেকে গাড়ি, কারখানায়, শপিংমলে অগ্নিসংযোগ ও বেশ কিছু কারখানায় ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুর করা হয় গণপরিবহন। এ অবস্থায় গাজীপুর শিল্প এলাকার দুই শতাধিক কারখানায় ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।

পরে শ্রমিকদের আন্দোলনের বিষয়টি নিয়ে সরকার, মালিক, বিজিএমইএ, শ্রমিক সংগঠনের নেতারা আলোচনায় বসেন। গঠন করা হয় মজুরি বোর্ড, যেখানে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে নভেম্বর মাসে ঘোষণা ও ডিসেম্বর মাস থেকে কার্যকরের সিদ্ধান্ত হয়। এ অবস্থায় শনিবার থেকে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত নেয় বিজিএমইএ।সিদ্ধান্ত মেনে গাজীপুরে অধিকাংশ তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দেন শ্রমিকেরা।

ভ্যালমন্ট ফ্যাশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (রক্ষণাবেক্ষণ) নুর হাসান জুয়েল বলেন, ‘সিদ্ধান্ত মেনে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সকাল থেকেই কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের কারখানার শ্রমিকেরা আন্দোলন করেনি। বহিরাগতদের হামলা ও ভাঙচুর ঠেকাতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। আলহামদুলিল্লাহ শনিবার সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কারখানায় কাজ শুরু হয়েছে।’তবে এ ব্যাপারে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এদিকে, গাজীপুর শ্রমিকদের সহিংসতা ঠেকাতে ৩ হাজারের বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন গাজীপুর -২ শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষ ও সহিংসতার পর শনিবার সকাল থেকে অধিকাংশ কারখানা খোলা হয়েছে।সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কাজ চলছে।

সারোয়ার আলম বলেন, কারখানা এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সহিংসতা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বেশ কয়েকজন শ্রমিক গ্রেপ্তার ও মামলা দায়েরও করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে গাজীপুর মহানগর পুলিশের কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, ‘সকাল থেকে সব কারখানা খোলা আছে এবং শ্রমিকেরা কাজ করছে। কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শ্রমিকেরা বুঝতে পেরেছে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের ব্যবহার করেছে। তাদের ন্যায়সগত দাবিতে সরকার আন্তরিক। এজন্য শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন রয়েছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d