‘বিয়ের নেশায়’ ব্যাংক কর্মকর্তা আসিফ কারাগারে
বিয়ে করাই যেন তার নেশা। অভিনব কৌশলে একের পর এক বিয়ে করে তালাক দেন। এভাবে ৩০ বছর বয়সে তিনি করেছেন চার বিয়ে। বিয়েপাগল এই প্রতারকের নাম আসিফ ইকবাল।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখায় সহকারী ক্যাশ অফিসার আসিফ সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার রামভদ্রপুর গ্রামের আকরম আলীর ছেলে।
তৃতীয় স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় গতকাল বুধবার বিকেলে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন ঝিনাইদহের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মিজানুর রহমান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেন আসিফ। পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণ মামলা করলে সেই মামলায় কারাগারে যান তিনি।
পরে ওই স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করার শর্তে রক্ষা পান। বিয়ের কিছুদিন পর সেই মেয়েকে তালাক দেন আসিফ। এরপর বিভিন্ন নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ২০২০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক ছাত্রীকে বিয়ে করেন।
বিয়ের কিছুদিন পর চলতে থাকে পরকীয়া। ২০২১ সালের ২৬ জুলাই দ্বিতীয় স্ত্রী থাকা অবস্থায় তৃতীয়বার বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের বনানীপাড়ার এক নারীকে। বিয়ের পর তৃতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ঝিনাইদহে অবস্থান করেন প্রতারক আসিফ। তৃতীয় স্ত্রী একাধিক বিয়ের খবরটি জেনে ফেলায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেন আসিফ। এরপর তাকে নিয়ে ঘর করতে থাকেন।
এ অবস্থায় আবারও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। প্রতিবাদ করায় তৃতীয় স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন আসিফ।
এক পর্যায়ে গত ফেব্রুয়ারি মাসে তৃতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে উম্মে হাবীবা প্রান্তি নামের আরেক তরুণীকে ঘরে আনেন আসিফ। নিরুপায় হয়ে তৃতীয় স্ত্রী ফাতেমা খাতুন ঝিনাইদহের একটি আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
মামলার বাদী বলেন, ‘আসিফ একজন নারীলোভী, প্রতারক ও যৌতুকলোভী। দ্বিতীয় স্ত্রী থাকা অবস্থায় আমাকে বিয়ে করেছিল। আমার পর আরো এক মেয়েকে বিয়ে করেছে। তার নেশা বিয়ে করা। এমনকি চতুর্থ বিয়ের পরও ফেসবুকে পরিচয় আরেক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক করেছে। শুনছি জেল থেকে বেরিয়ে তাকেও বিয়ে করবে।’
ঝিনাইদহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালের কণ্ঠকে বলেন, ফাতেমা খাতুন নামের এক নারীর মামলায় আসিফকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিজ্ঞ আদালত।