জাতীয়

বেসরকারি শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলিতে সমস্যা নেই: শিক্ষামন্ত্রী

বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া বেসরকারি শিক্ষকদের পারস্পরিক বদলিতে কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।

বুধবার (৫ জুন) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে জাতীয় মনিটরিং ও আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী একথা জানান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এনটিআরসির প্রক্রিয়া নিয়ে উচ্চ আদালত থেকে একটি সুনির্দিষ্ট রায় আছে। সেই রায়ের আলোকে সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সেখানে সুপারিশের আলোকে আবেদন আহ্বান করা হয়। সেভাবে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, আমাদের একটি মৌলিক আইনি বিষয় মাথায় রাখতে হবে। সেটা হচ্ছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্বাধীন। তারা সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত কিংবা নিয়োগকৃত শিক্ষক না। প্রতিষ্ঠানে এনটিআরসি সুপারিশ করে, সেই সুপারিশ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান তাদের নিয়োগ দেয়। সরকার কিন্তু নিয়োগদাতা না। যিনি নিয়োগদাতা না, তিনি কীভাবে একজন শিক্ষককে বদলি করতে পারেন? সরকার যেহেতু নিয়োগ দিচ্ছে না, সেহেতু সরকারের পক্ষে তাদের বদলি করা খুবই চ্যালেঞ্জিং।

শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, তবে একটা বিষয় প্রাথমিকভাবে আলোচনা হয়েছে, পারস্পরিক বদলি। যদি সরকার সরাসরি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকত বা সরকারের মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক হতেন তারা, তাহলে বদলিটা সরকার করতে পারত।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখন নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার সময় ইনডেস্কধারী শিক্ষকরা কতটুকু সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারবে, সেটা আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। যেহেতু আদালতের একটি রায় আছে। আর বদলির আলোচনাটা কাঠামোগত আরও চ্যালেঞ্জের হতে পারে। যখন একজন শিক্ষক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, আমি একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করব। তিনি নিজেই সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন তিনি বলছেন, সেটা তার বাড়ি থেকে অনেক দূরে। তিনি তাহলে কেন সেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন? এখন যদি বলেন, আমরা নিরুপায় হয়ে সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সেটা অ্যাকোমোডেট করা, সরকারের পক্ষে, এনটিআরসির পক্ষে, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে কতটুকু করা সম্ভব, সেটা ভেবে দেখতে হবে। আর সার্বিকভাবে সব পর্যায়ে বদলি কতটুকু করা যাবে, সেটা কাঠামোগত সংস্কার না হলে সম্ভব না।

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে মৌলিক বিষয়ে শিক্ষক থাকা নিশ্চিত করতে হবে। সব শিক্ষকই যদি শহরমুখী হয়ে যান, তাহলে গ্রামপর্যায়ের বিদ্যালয়গুলোতে মৌলিক বিষয়ে শিক্ষক আমরা পাব না। কারও ঠিকানা পঞ্চগড়ে, তিনি আবেদন করেছেন কিংবা সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন বরগুনাতে, তার জন্য যদি এটা অর্থবহ না হয়, তাহলে এটা ছেড়ে দিয়ে নতুন একটায় ফের আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো বাধা নেই। কিন্তু যেহেতু আদালতের একটি রায় আছে, সেটা মেনেই নিয়োগ ও সুপারিশ করতে হচ্ছে; সেটা মাথায় রেখেই এটা করতে হবে। পারস্পরিক বদলিতে কোনো সমস্যা নেই। এতে শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।

পারস্পারিক বদলিতে সমস্যা নেই। একজন ইংরেজি শিক্ষক এক প্রতিষ্ঠানে আছেন, সেখানে যদি আসতে চান তাহলে পারস্পরিক বদলি হলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কিন্তু শিক্ষক যদি না থাকে এবং যদি বদলি হয়ে চলে যান সেটা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে যাবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোলেমান খান, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব ড. মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকারসহ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d