অর্থনীতিজাতীয়

বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ে চালু হচ্ছে ‘টাকা পে’ কার্ড

বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করতে ভিসা ও মাস্টার কার্ডের মতো ‘টাকা পে’ নামে দেশে এই প্রথম নিজস্ব কার্ড চালু হতে যাচ্ছে। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবনে এই কার্ডের উদ্বোধন করবেন।

কার্ডটি ইস্যু করবে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ব্র্যাক। প্রাথমিকভাবে এসব ব্যাংক পাইলটভিত্তিতে ‘টাকা পে’ ইস্যু করবে। শীঘ্রই অন্য ব্যাংকগুলোও এই কার্ড গ্রহণ ইস্যু করবে। এই কার্ডটি প্রাথমিকভাবে দেশে ব্যবহারের জন্য চালু করা হচ্ছে। পরে এর ব্যবহার প্রতিবেশী ভারতে সম্প্রসারণ করা হবে। প্যারিসভিত্তিক কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ‘ফাইম’ কার্ডটি তৈরি করেছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আর এফ হোসেন, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিনসহ কয়েকজন ব্যাংক কর্মকর্তা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে এটি দেশের ভেতরে ব্যবহার করা যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত ইলেকট্রনিক পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম ‘ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ বাংলাদেশ’র ব্যবহারের মাধ্যমে টাকা পে জাতীয়ভাবে একই সেবা দেবে। এই প্ল্যাটফর্মে বিদেশী ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান যুক্ত হলে টাকা পে বিদেশেও ব্যবহার করা যাবে। অচিরেই এই কার্ডের ব্যবহার ভারতেও সম্প্রসারিত হবে।

গত ১৮ জুন বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার জানান, চিকিৎসা, ভ্রমণসহ বিভিন্ন কাজে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অনেকে ভারতে যান। এ জন্য মার্কিন ডলার কিনে ভারতে গিয়ে রুপিতে রূপান্তর করতে হয়। এতে ভ্রমণকারীকে প্রায়ই বিনিময় হারজনিত লোকসানে পড়তে হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে টাকা পে নামে ডেবিট কার্ড আনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এই ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে মানুষ টাকা বা রুপি তুলতে পারবে। এটি ভারতে ভ্রমণকারী বাংলাদেশীরা অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

পেমেন্ট নেটওয়ার্ক ভিসা ও মাস্টারকার্ডের মাধ্যমে ব্যাংক বা অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে টাকার ইলেকট্রনিক স্থানান্তর করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানগুলো ক্রেডিট, ডেবিট ও প্রিপেইড কার্ডের জন্য ব্র্যান্ডেড পেমেন্ট প্রসেসিং পরিষেবা দেয়, যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহকদের অফার দিয়ে থাকে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, এটি একটি স্বাধীন কার্ড হবে। বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি অত্যন্ত অপরিহার্য। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার প্রথমবারের মতো টাকা পে চালুর ইঙ্গিত দিলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুই কমিটি এটি চালুর জন্য কাজ করে।

কমিটিতে ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রতিনিধিরা আছেন। প্রতিবেশী যেসব দেশের এমন নিজস্ব কার্ড আছে, সেগুলোর নাম হলো- ভারত (রুপে), পাকিস্তান (পাকপে), শ্রীলঙ্কা (লংকাপে) ও সৌদি আরব (মাদা)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d