মহব্বতে শরবত : বিকেল হতেই ভিড় জমে লাল মিয়ার দোকানে
নগরের লাভ লেইনের মোড় থেকে বাম পাশের রাস্তা ধরে একটু এগোলেই মাদানী মসজিদ। তার ঠিক ওপারেই রাস্তার এক কোণে ছোট একটি টেবিল নিয়ে সাজিয়েছেন দোকান।
রমজানে দুপুর গড়িয়ে বিকেল ৩টা বাজতেই দোকানে ক্রেতাদের আনাগোনা একটু একটু করে বাড়ে। কেউ আসেন অক্সিজেন থেকে, কেউ বহদ্দারহাট আবার কেউ চলতি পথে দাঁড়িয়ে পড়েন বিখ্যাত সেই লাল মিয়ার মহব্বত শরবত কিনতে।
ক্রেতা আসতেই চল্লিশ ঊর্ধ্ব লাল মিয়ার দুই হাত চলে সমানতালে। যেন রাস্তার ওপর ভিড় বেশি না হয় তাই চটজলদি ক্রেতার চাহিদা মতো পলিথিনে মুড়ে দেন শরবতের বোতল। সারা বছরই একই জায়গায় মহব্বত শরবত বিক্রি করেন লাল মিয়া। তবে তাঁর সেই শরবতের সুখ্যাতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই এখন বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজন আসছেন দোকানে।
ব্যস্ততার মধ্যেও কথা বলতে এগিয়ে গেলাম। কথা প্রসঙ্গে লাল মিয়া জানান, ১৬ বছর ধরে তাঁর এই ব্যবসা। তবে রমজানে মহব্বত শরবত দুই ধরনের হয়। সারা তরমুজের মহব্বত শরবত থাকলেও রমজানে বাদামের শরবতও থাকে।
কিভাবে বানান এ শরবত এমন প্রশ্নে হেসে বললেন, পুরো প্রক্রিয়ায় সিক্রেটটা তো বলা যাবে না। তবে তরমুজের সাথে তোমকা, ইসবগুল, চিনি সহ একটি বিশেষ প্রক্রিয়া থাকে। বাদামের শরবতের ক্ষেত্রে থাকে জেলী, মধু। তবে শরবতে কোনো কেমিক্যাল বা অন্য কোনো ক্ষতিকর কিছু থাকে না।
অক্সিজেন আর নিউমার্কেট থেকে এসেছিলেন রাহীম ও শরীফ নামে দুই ক্রেতা। তারা জানালেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকেই জানতে পারেন এ শরবতের কথা। তাই এখানে এসেছেন মহব্বত শরবত কিনতে।
আরেকজন জানালেন, ভ্লগে ভারতে এমন শরবত বানাতে দেখেছেন, তাই নিজের শহরে যখন এমন শরবত পাওয়া যাচ্ছে তাই কিনতে আসা।
দোকানের পাশেই শরবত তৈরি করছিলেন তাঁর এক সহযোগী। তিনি জানালেন, বিক্রি অনুযায়ী শরবত তৈরি করেন তারা। তবে আধা লিটার-এক লিটার মিলিয়ে রমজানে প্রতিদিন ২৫০ বোতল বিক্রি হয়। তরমুজের শরবত লিটার ১৪০ টাকা ও বাদামের শরবত ২০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। কেউ এক গ্লাস নিতে চাইলে তাও বিক্রি করা হয়।