মাছ সংকটে সিরাজগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদন ব্যাহত
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা মৎস্যভান্ডার খ্যাত নামে পরিচিত। কিন্তু বিলে মিলছে না মাছের দেখা। বিশেষ করে চায়না জালে অবাধে চলছে মাছ শিকার। ফলে বর্ষার মৌসুমে তীব্র মাছ সংকটে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুঁটকি চাতাল।
চলনবিলে জলাভূমিতে প্রচুর মাছ আহরণ করে শুঁটকি তৈরি হয়। কিন্তু এ বছর চলনবিলে মাছের সংকটে হারিয়ে যাচ্ছে চলনবিলের স্বাধু পানির মাছ। এতে গত বছরের তুলনায় এবার উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে মৎস্য বিভাগ আশা করছে গত বছরের সমপরিমাণ শুঁটকি এবারও উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো।
শুঁটকির পুরোনো ব্যবসায়ী ও চাতাল মালিক মো. নান্নু হোসেন বলেন, চলনবিলে এ বছর বর্ষা কম হওয়ায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ মাছ ধরা পড়ছে না। এ ছাড়া মহিষলুটি আড়তেও তেমন মাছ পাওয়া যাচ্ছে না। আমার শুটকির চাতালে প্রতিদিন ১০০ মণ কাঁচা মাছের প্রয়োজন। অথচ সর্বোচ্চ ২০ মন থেকে ৩০ মণ মাছ সংগ্রহ করতে পারছি। তাও আবার বেশি দামে মাছ কিনতে হচ্ছে। এ বছর ব্যবসার অবস্থা খুবই খারাপ।
সরেজমিনে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের মহিষলুটি শুঁটকির চাতালে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে বিশাল এলাকাজুড়ে বিভিন্ন স্থানে শুঁটকি তৈরির চাতাল। কয়েকটি চাতালে সামান্য পুঁটি মাছ রোদে শুকানো হচ্ছে। অন্যগুলোতে সব চাটাই গোছানো।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মসগুল আজাদ বলেন, চলনবিলের মাছের শুঁটকির সুনাম ও চাহিদা দুটোই রয়েছে। ফলে আমরা এই শুঁটকির মান বৃদ্ধির জন্য চাতাল মালিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। এ বছর চলনবিলে কয়েক দফায় পানি আসা ও দ্রুত শুকিয়ে যাওয়ার কারণে মাছের সংঙ্কট দেখা দিয়েছে। গত বছর এ উপজেলা থেকে ১৪৩ মেট্রিকটন শুঁটকি উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৩০ থেকে ৪০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন কম হবে। এখন পর্যন্ত সঠিক হিসাব করা সম্ভব না হলেও ধারণা করা যাচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ মেট্রিক টন শুঁটকি উৎপাদন হবে। প্রাকৃতিক মাছের প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ করতে না পারলে চলনবিলে মাছ সংকট দেখা দিবে।