মায়ের টাকায় জামিনে বের হয়ে মাকেই হত্যা করে আক্কাস
নেশার টাকার জন্য মাঝে মধ্যেই বাবা-মাকে মারধোর করতো আক্কাস শেখ (৩৫)। ভয়ে বাবা-মা দিয়ে দিতেন টাকা। একবার মাদকসহ পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেলাও খাটেন। পরে মায়ের টাকায় জামিনে বের হয়ে আবারও নেশায় মগ্ন হন ছেলে।প্রায় ২০ দিন পরে নেশার জন্য মায়ের কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে সেই মাকেই লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুত্বর জখম করে। পরের দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আমেনা বেগম।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দুপুরে গৃহবধূ আমেনা বেগমকে হত্যার দায়ে ছেলে আক্কাসর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত। সেই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।এ সময় আসামি আক্কাস শেষ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
মামলার এজাহার ও আদালতের রায় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের উত্তর আলীপুর মহল্লার বাসিন্দা মোনহাজ ও আমেনার মেঝ ছেলে আক্কাস। শেখ আক্কাস মাদকাসক্ত ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় চাপ প্রয়োগ করে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে মাদক সেবন করতেন।
গত ২০১৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে আক্কাস মা আমেনা বেগমের নিকট নেশা করার জন্য টাকা চান। আমেনা বেগম টাকা দিতে অস্বীকার করলে আক্কাস প্রথমে মাকে একটি মেহগনি গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এর ফলে মা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর আক্কাস দা দিয়ে মায়ের মাথায় কোপ দিয়ে পালিয়ে যান। পরে স্থানীয়রা মুমূর্ষ অবস্থায় আমেনা বেগমকে উদ্ধার করে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওইদিনই মৃত্যু হয় আমেনা বেগমের। মাকে হত্যার আগে মাদকসহ পুলিশের হাতে আটকও হন আক্কাস। সেই মায়ের টাকায় হত্যার প্রায় ২০ দিন আগে জামিনে বের হয়ে হত্যা করে মাকে।