জাতীয়

মুসলমানদের রাতজেগে মন্দির-গির্জা পাহারায় অভিভূত বিশ্ব

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুর্নিবার বাধার মুখে সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সেদিন থেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে থানা ছাড়তে থাকেন পুলিশ সদস্যরা।

এক পর্যায়ে কর্মবিরতিতে চলে যায় পুলিশ।

এমতাবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও উপাসনালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

অবশ্য ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির সময়ই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয় পাহারা দিতে ছাত্রদের আহ্বান জানানো হয়।

পরে আ.লীগ সরকারের পতনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি, স্থাপনা ও উপাসনালয়ের ওপর যেন আক্রমণ না হয়; সে বিষয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার বার্তা দেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র ও ইসলামি স্কলাররা।

এছাড়া মসজিদের মাইক থেকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ও মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা পাহারা দিতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান দেশের প্রসিদ্ধ ইসলামি ব্যক্তিত্ব শায়েখ আহমাদুল্লাহ, মিজানুর রহমান আজহারীসহ আরও অনেকে।

দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও তার দলীয় কর্মীদের এ বিষয়ে সতর্কবার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘সংখ্যালঘুদের ওপর যেন কোনো আক্রমণ না হয়। তাদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। ’

বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামের আমির শফিকুর রহমানও একইরকম বার্তা দেন তার দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে।

তিনি বলেন, দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, কোনো দুষ্কৃতকারী যাতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর কোনো ধরনের হামলা যাতে না হয়, সে জন্য পাহারাদারের ভূমিকা পালন করতে হবে। সংখ্যালঘুদের জানমাল, উপাসনালয় ও ঘরবাড়ি রক্ষা করতে হবে।

রাজনৈতিক দলগুলো ও ইসলামি স্কলারদের এ আহ্বানে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যা স্পষ্ট। মন্দির-গির্জা পাহারা দিচ্ছেন ছবি পোস্ট করতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। এ সম্প্রীতির বাংলাদেশ দেখে অভিভূত গোটা বিশ্ব।

গত সোমবার থেকেই রাতভর জেগে দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তায় মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা পাহারা দিয়ে আসছেন ছাত্র-জনতা। যেখানে রয়েছেন স্কুল-কলেজ ও কওমি মাদরাসাছাত্ররা। স্থানীয়রাও তাদের সহায়তা করছেন। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে জামায়াত-শিবিরের ও হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d