মৃত্যুর মুখে ডলু নদী
সাতকানিয়া উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে প্রাচীনতম ডলু নদী। বান্দরবান জেলার টংকাবতী ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় উৎপত্তি হয়ে সাতকানিয়া উপজেলায় উপর দিয়ে সাঙ্গু নদীতে থেমেছে। আগেরকার দিনে ভারত-মিয়ানমার থেকেও মালামাল আসতো ডলু নদী হয়ে। ডলু ব্রিজে বাদশা মিঞার ঘাট হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে বোটগুলো পাড়ে ভিড়তো। এ ঘাটে মালামাল আসতো আর বণিকেরা বিভিন্ন ব্যবসা করতেন। মানুষ কৃষিকাজের জন্য নদীর পানি ব্যবহার করতো। নদীতে ময়লা আর্বজনা ফেলা এবং নদী থেকে বালু উত্তোলনে নদীর স্রোত এবং নদীর পরিচয় হারিয়ে গেছে। এছাড়া বালুর স্তূপ জমে উঁচু উঁচু টিলার সৃষ্টি হয়ে নদীর গতিপথ হারিয়ে যাচ্ছে। পানি শূন্য বললেই চলে এই নদীটি। বর্ষা মৌসুমে নদী ভর্তি পানি থাকার কথা থাকলেও পানি শূন্য মরা ডলুতে রূপান্তরিত হয়েছে।
উপজেলার সোনাকানিয়া, পৌরসভা, পশ্চিম ঢেমশা এবং নলুয়ার ইউনিয়নের বুক ছিঁড়ে বয়ে গেছে ডলু নদী। আর নদীর মাঝখানে জেগে উঠেছে বড় বড় মাটি বালু মিশ্রিত টিলা। এই টিলার কারণে নদীর গতিপথ হারাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী রক্ষায় ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা না করলে হারিয়ে যেতে পারে শত শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নদীটি।
স্থানীয় মোহাম্মদ হাসান বলেন, ডলু নদীতে আগে নৌকা থাকতো, এখন গরু ঘাষ খেতে নদীতে নামে। নদীতে যে টিলাগুলো জেগে উঠেছে এগুলো যদি কেটে ফেলা না হয় তাহলে নদীতে পাহাড়ি ঢল নামলে আবার আমাদের গ্রাম ডুবে যাবে।
পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল হক সুমন বলেন, ডলু নদীতে টিলার সৃষ্টি হয়ে আমার ইউনিয়নের অংশে দ্বীপের মতো তৈরি হয়েছে। যদি আবার ভারি বর্ষণ হয় তাহলে পানির গতিপথ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়ে আমার ইউনিয়নের ঘরবাড়ি এবং রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছি। আমি নদী খননের জন্য কয়েকটি দপ্তরে আবেদন দিয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পটিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অপু দেব বলেন, নদী খননের বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। মূলত একটি পরিকল্পনা করে প্রজেক্ট হাতে নিতে হবে। তবে আমরা খুব তাড়াতাড়ি বিষয়টি সমাধান করবো।