মেডিক্যাল ট্যুরিজম প্রমোট করতে চায় মালয়েশিয়া
বন্দরনগরী চট্টগ্রামে মালয়েশিয়ার ‘মেডিক্যাল ট্যুরিজম’ নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার রাতে চট্টগ্রাম ক্লাবের ফ্যামিলি ডাইনিং হলে অনুষ্ঠিত সভায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্তরের ব্যবসায়ীরা অংশ নেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাই কমিশনার হাজনাহ্ মো. হাশিম।
চট্টগ্রামে মালয়েশিয়ার অনারারি কনস্যুল ও পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ এ সভার আয়োজন করেন। সভার শুরুতে মালয়েশিয়ার বিখ্যাত ইউসিএসআই হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন ধর্মের মানুষ সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসবাস করছে। বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অতীত থেকেই রয়েছে। দুটি দেশই মুসলিশ দেশ; ফলে আমাদের সংস্কৃতিও প্রায় অভিন্ন। মালয়েশিয়া অর্থনীতির পাশাপাশি উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রত্যেক সেক্টরে এগিয়ে গেছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য তার অন্যতম। বিশ্বের জনপ্রিয় অনেক গাড়ির ব্রান্ডের মধ্যেও মালয়েশিয়ার প্রোটন বাজার দখল করতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষা-স্বাস্থ্যের জন্য মানুষ এখন দেশের বাইরে যাচ্ছে। মালয়েশিয়ার চিকিৎসা ব্যবস্থারও অনেক উন্নতি হয়েছে।
মালয়েশিয়ার চিকিৎসাসেবা বা ‘মেডিক্যাল ট্যুরিজম’ প্রমোট করতে চান উল্লেখ করে হাই কমিশনার হাজনা মো. হাশিম বলেন, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ দেশের বাইরে চিকিৎসা করবেন না বলে জানিয়ে দেন। উন্নত চিকিৎসা সেবায় নানা উদ্যোগ নেন। ফলে আধুনিক ও উন্নত সেবা নিয়ে একাধিক হাসপাতাল গড়ে ওঠে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে মালয়েশিয়া অনেক দূর এগিয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষার পাশাপাশি আমরা চট্টগ্রামসহ পুরো দেশে চিকিৎসাসেবা সম্পর্কে জানাতে চাই। যে কোনো জটিল রোগের উন্নত চিকিৎসা আমাদের রয়েছে। মুসলিম দেশ হিসাবে বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার সংস্কৃতির মিল রয়েছে। ফলে সহজেই চিকিৎসা সেবা নিতে পারবেন।
চট্টগ্রামে মালয়েশিয়ার অনারারি কনস্যুল মোহাম্মদ আকতার পারভেজ বলেন, চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশের মানুষ থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন। এসব দেশের পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য আরও একটি দেশ আছে; সে বিষয়ে জানাতেই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। মালয়েশিয়ায় এখন অনেকগুলো উন্নত মানের হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে সব ধরনের চিকিৎসা পাওয়া যাচ্ছে।
ইউসিএসআই হাসপাতালের বিষয়ে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় উন্নত হাসপাতালগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। বিমানবন্দর থেকে মাত্র ২০ থেকে ২৫ মিনিটে হাসপাতালে পৌঁছা সম্ভব। এছাড়া বেড টু বেড সেবার পাশাপাশি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স’র ব্যবস্থা রয়েছে; এটা বড় সুযোগ। দেখা যায় অনেক রোগী হাসপাতালের বেড থেকে কোথাও যেতে পারে না, সেই রোগীকেও ইউসিএসআই তাদের হাসপাতালের বেডে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবে। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য, বিশেষ করে গাড়ি ও শিক্ষার জন্য মালয়েশিয়া ভালো গন্তব্য হিসাবে বিশ্বাস করি। এখন সময় এসেছে স্বাস্থ্যখাতে বিশ্বাসের।
সভায় চট্টগ্রাম ক্লাবের চেয়ারম্যান মিয়া মো. আবদুর রহিম, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বক্তব্য রাখেন। এসময় চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, মোহাম্মদ আলমগীর পারভেজ, বারকোড রেস্টুরেন্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মো. মনজুরুল হক, চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটিং ট্রেজারার মোহাম্মদ সাজ্জাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।