খেলা

মেসিকে অভিনন্দন জানিয়ে নেইমারকে খোঁচা দিলেন লুলা!

একবার-দুইবার নয়, অষ্টমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতলেন লিওনেল মেসি। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়ে তিনটি বেশি! মেসি যেখানে নিজেকে সর্বকালের সেরাদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন, সেখানে সব সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও নেইমার সহ ব্রাজিলের অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার শুধু প্রতিভার অপচয়ই করেছেন।

এ নিয়ে হতাশ ব্রাজিলের সকল ফুটবলপ্রেমী থেকে শুরু করে খোদ প্রেসিডেন্টও।
প্যারিসের তিয়াটর দু শাতলে মেসির ব্যালন ডি’অর জেতা নিয়ে ফুটবলবিশ্বে রীতিমতো উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়েছে। অভিনন্দন আর শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। তার নিজ দেশ আর্জেন্টিনায় চলছে উৎসবের আমেজ। পাশের দেশ ব্রাজিলেও এর ঢেউ আছড়ে পড়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা নিজের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ‘এক্স’-এ মেসিকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি ব্রাজিলিয়ান তরুণদের জন্য আদর্শ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

লুলা দা সিলভা নিজেও একজন ফুটবল সমর্থক। স্বাভাবিকভাবেই মেসির অষ্টম ব্যালন ডি’অর জয় তার ওপর প্রভাব ফেলেছে। নিজের সাপ্তাহিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্রডকাস্টে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের জন্য মেসি আদর্শ নয়, এমনটা হতে পারে না। একজন ৩৬ বছর বয়সী খেলোয়াড়, যে যুক্তরাষ্ট্রের লিগে খেলে, গত বছর বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং এ বছর সে আবারও ব্যালন ডি’অর জিতে নিয়েছে। ‘

মেসির পেশাদারিত্বের ভূয়সী প্রশংসাও করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। বিশেষ করে কম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি লিগেও যে মনোযোগ ধরে রেখেছেন মেসি, তা দেখে মুগ্ধ লুলা। অথচ ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের মধ্যে এই বিষয়টা অনুপস্থিত। লুলার মতে, ব্রাজিলের প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা যত দ্রুত আবির্ভূত হয়, তত দ্রুত হারিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলিয়ান তরুণ যারা ১৬-১৭ বছরে উঠে আসে এবং এরপর বিদেশে ট্রান্সফার হওয়ার পর হারিয়ে যায়, তাদের জন্য মেসি আদর্শ। ‘

পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল ২০০২ আসরের পর আর শিরোপার মুখ দেখেনি। অথচ দলটিতে প্রতিভার কমতি ছিল না কোনোকালেই। অনেককে তো ‘নতুন পেলে’ উপাধিও দেওয়া হয়েছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দলটির সবচেয়ে বড় তারকা নেইমারকে ঘিরেই প্রত্যাশা ছিল বেশি। কিন্তু প্রতি আসরেই হতাশ করেছেন তিনি। এর পেছনে তার অতিরিক্ত পার্টি-প্রীতি এবং ফুর্তিতে মেতে থাকার স্বভাবকে দায়ী করা হয়। তবে নেইমার একা নন, ব্রাজিলের তারকা ফুটবলারদের অনেকেরই এই ‘বদভ্যাস’ রয়েছে। যার প্রভাব পড়ে মাঠের খেলায়ও। যে কারণে শিরোপা তো দূরে থাকুক, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও মেসির ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি তারা।

লুলার মতে, মেসিকে দেখে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের শেখা উচিত একজন ফুটবল আদর্শকে কতটা পেশাদার এবং নিবেদিত হতে হয়। এ প্রসঙ্গে নেইমারের নাম উল্লেখ না করে খোঁচা দেন ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ‘ব্যালন ডি’অর পেশাদারদের জন্য এবং রাতভর পার্টি করে বেড়ানোর সঙ্গে এটা যায় না। তুমি যদি উদাহরণ সেট করতে না পারো, তাহলে তুমি আসলে ততটা ভালো নও। ২২ বছর হয়ে গেছে আমরা কিছুই জিততে পারিনি। যে অবস্থা, আমরা যদি সচেতন না হই এবং আরও বেশি সিরিয়াস ও দায়িত্ববান না হই, তাহলে আমাদের শিরোপা খরা আরও দীর্ঘায়িত হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d