দেশজুড়ে

মৌলভীবাজারে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী

মৌলভীবাজারে জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

তবে মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার ৪৭টি ইউনিয়নের অন্তত ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মৌলভীবাজার জেলার মনু, কুশিয়ারা ও জুড়ী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর পানি কমছে।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, মনু নদীর পানি রেলওয়ে ব্রিজে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার, চাঁদনীঘাট ব্রিজে ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই নদীর বিপদসীমার ১১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুশিয়ারা নদী শেরপুর ব্রিজে বিপদসীমার ১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জুড়ী নদী বিপদসীমার ২০৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বিশেষ করে সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ড বাড়ি-ঘরে পানি ছুঁই ছুঁই করছে। বাড়িঘরে পানি ঢুকে পড়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। কুশিয়ারা নদীর পানি বেড়ে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ও ফহেতপুরসহ কয়েকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে।

এ ছাড়া কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর এলাকা, রাজনগর ও সদর কুশিয়ারি নদীর পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত রয়েছে। শ্রীমঙ্গলের নিচু এলাকায় ভারী বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ধলাই নদীর লাই নদের প্রতিরক্ষা বাঁধের তিন জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধ ভেঙে ২০টি গ্রাম ও পৌরসভার ড্রেন দিয়ে পানি প্রবেশ করে দুটি মাধ্যমিক স্কুল এবং তিনটি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়। এতে এসব এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তবে সকাল থেকে ধলাই নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২ লাখ ৮১ হাজার ৯২০ জন মানুষ পানিবন্দী আছেন। ২০৫টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ৬ হাজার ২৫৩ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। আশ্রয় কেন্দ্রে ২০০টি গবাদিপশু রয়েছে। ২৪০টি করে ১০ লিটার বিশুদ্ধ পানির বোতল বন্যাকবলিত এলাকায় সরবরাহ করা হয়েছে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, বন্যাকবলিতদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হচ্ছে। এ ছাড়া পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ৬৫ হাজার সরবরাহ করা হয়েছে। ৭০টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। জেলায় ত্রাণ সরবরাহ করা হয়েছে ৪২২ মেট্রিক টন।

নগদ ২ লাখ সাড়ে ৮৭ হাজার টাকা, ৪৬৫টি শুকনো খাবারের প্যাকেট এবং অন্যান্য রান্না করা খাবার ১২০০ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d