জাতীয়

যুদ্ধ বন্ধ করে ক্ষুধার্তের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ বন্ধ করে অস্ত্র তৈরি ও প্রতিযোগিতার টাকা জলবায়ুর অভিঘাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে, ক্ষুধার্তের আহার ও শিশুশিক্ষায় কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলের চলমান গণহত্যা ও মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর জাতিগত নিধন বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, যুদ্ধ মানবজাতির জন্য কী কল্যাণ বয়ে আনছে?

বুধবার (২৯ মে) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দ্বন্দ্ব, সংঘাত, যুদ্ধ আজ বিশ্বশান্তি বিঘ্নিত করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় হাজার হাজার মানুষ মরছে, সেখানে গণহত্যা চলছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাস্তুচ্যুত করা- ইত্যাদি মানবজাতির জন্য এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আমি ঠিক জানি না, এই সংঘাত বা যুদ্ধ মানবজাতির জন্য কী কল্যাণ বয়ে আনছে? অস্ত্র প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়ত যত বৃদ্ধি পাচ্ছে, ততই মানুষের জীবন আরও বেশি দুর্বিষহ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে নারী, শিশুরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। যুবকরা অকাতরে জীবন দিচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আলাপ-আলোচনা মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান করতে চাই।

সরকারপ্রধান বলেন, বিশ্বের এক বিশাল সংখ্যক মানুষ এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে রয়েছে। কোটি কোটি মানুষ দুবেলা খাবার পায় না। রোগের চিকিৎসা পায় না। শিশুরা শিক্ষা পায় না, শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। যারা অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্র প্রতিযোগিতায় এত অর্থ ব্যয় করছেন, তাদের কাছে আমার আহ্বান- আমরা শান্তির কথা বলি, কিন্তু সংঘাতে লিপ্ত হই, কেন? এই যে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, এই অর্থ যদি ক্ষুধার্ত মানুষের আহার, শিক্ষা ও চিকিৎসায় ব্যয় হতো, তাহলে এই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতো, মানুষের জীবনমান উন্নত হতো, মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচতে পারতো। কিন্তু এই সংঘাত প্রতিনিয়িত মানুষকে আরও কষ্টের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আমি সবসময় যেখানেই যাই, এই একটি আহ্বান জানাই, সংঘাত নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা, সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কাজ।

‘সেই সঙ্গে যেসব দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে, সেই জলবায়ু অভিঘাত থেকে মানবজাতিকে রক্ষার জন্য এই অস্ত্র তৈরি ও প্রতিযোগিতার অর্থ দিতে পারে। পাশাপাশি ক্ষুধার্ত ও শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের ক্ষুধা নিবারণ ও শিক্ষার আলো দেওয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারে, সেই আহ্বানটাই আজ আমি জানিয়ে যাচ্ছি।’ যোগ করেন সরকারপ্রধান।

শান্তিরক্ষীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ এরই মধ্যে ৬৩টি মিশন সফলতার সঙ্গে সমাপ্ত করেছে। বর্তমানে ১৩টি মিশন চলমান। যে দরদ ও আন্তরিকতা দিয়ে আমাদের শান্তিরক্ষীরা কাজ করেন, বিশ্বের যেখানেই যাই, এ বিষয়ে প্রশংসা পাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d