যৌনপীড়নের মিথ্যা মামলা করায় ৩ বছরের জেল
যৌনপীড়নের অভিযোগে এনে মিথ্যা মামলা করায় সায়রা বানু (৫৫) নামে এক নারীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১১ অক্টোবর) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়নাল আবেদিন এই রায় দেন। সায়রা বানু, রাউজান থানার আধারমানিক গ্রামের মৃত হাছি মিয়ার স্ত্রী।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জিকো বড়ুয়া।
তিনি বলেন, যৌনপীড়নের অভিযোগে এনে মিথ্যা মামলা করায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ের সময় ট্রাইব্যুনালে আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৪ মে রাউজান থানার আধারমানিক গ্রামের সায়রা বানু রাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবার জন্য ঘরের বাইরে যায়। এ সময় সৎপুত্র মাহবুবুল আলমসহ ৩ জন ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক যৌনপীড়নের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ঘটনার প্রাথমিক সত্যতার বিষয়ে প্রতিবেদন দিলে ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। আসামি মাহবুবুল আলমকে পুলিশ গ্রেফতার করলে তিন মাস কারাগারে ছিলেন। তিনি তিন মাস পরে জামিনে বের হয়।
পরবর্তীতে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় বাদীসহ মোট ৩ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন। ইতিমধ্যে ননা মিয়া নামে এক আসামি মৃত্যুবরণ করায় মামলা থেকে অব্যাহতি পান। ২০২২ সালের ৩১ মে আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সকল আসামিকে খালাস দেন। মিথ্যা মামলায় আর্থিক, শারীরিক, সামাজিক ও মানসিক ক্ষয়ক্ষতি ও হয়রানির অভিযোগে মামলার বাদী সায়রা বানুর বিরুদ্ধে একই ট্রাইব্যুনালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১৭(১) ধারায় মামলা দায়ের করে খালাসপ্রাপ্ত আসামি মাহবুবুল আলম।
মামলায় অভিযোগ করেন, সৎ মা হয়ে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য সায়রা বানু মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছিলেন। ট্রাইব্যুনাল তা আমলে নিয়ে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ট্রাইব্যুনাল এই রায় দেন।