চট্টগ্রাম

‘রপ্তানির নামে অর্থ পাচার বিজিএমইএ সমর্থন করে না’

রপ্তানির নামে দেশ থেকে অর্থ পাচারের ঘটনা নিন্দনীয় উল্লেখ করে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) বলেছেন, প্রকৃত রপ্তানিকারকরা কখনই অর্থ পাচারের অপতৎপরতায় লিপ্ত নন। বিজিএমইএও কখনও এ ধরনের কাজ নৈতিকভাবে সমর্থন করে না। বিজিএমইএ মনে করে, যারা দেশের অর্থনীতি নিয়ে ছিনিমিনি খেলে তাদেরকে প্রচলিত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। একইসাথে যারা রপ্তানিকে বাধাগ্রস্ত করে, রপ্তানিকারকদের হয়রানি করে, দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত।

বুধবার সকালে চট্টগ্রামে কাস্টমস হাউসের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনারের সাথে বিজিএমইএ’র নেতৃবৃন্দের বৈঠকে এস এম মান্নান (কচি) এসব কথা বলেন।

বৈঠকে আমদানিকৃত ওভেন ফেব্রিক্সের চালান ছাড়করণে ও রপ্তানি পণ্য চালান জাহাজীকরণে ওজন জনিত সমস্যা, ডকুমেন্টেশন সমস্যা এবং আমদানিকৃত পণ্য চালান খালাসকালে এইচএস কোড সংক্রান্ত জটিলতাসহ কাস্টমস-সম্পর্কিত পরিষেবাগুলোতে বিদ্যমান জটিলতা এবং চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমানের সাথে বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) এর নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিজিএমইএ প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম, সহ-সভাপতি (অর্থ) মো. নাসির উদ্দিন, সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহ-সভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী, বিজিএমইএ’র পরিচালক এম. আহসানুল হক, মোহাম্মদ মুসা, গাজী মো. শহীদউল্লাহ্, শোভন ইসলাম, হারুন অর রশিদ, মোহাম্মদ সোহেল সাদাত, মো. আশিকুর রহমান (তুহিন), শামস্ মাহমুদ, মো. মহিউদ্দিন রুবেল, মো. নুরুল ইসলাম, বিজিএমইএ’র প্রাক্তন প্রথম সহ-সভাপতি এস.এম. আবু তৈয়ব, নাসির উদ্দিন চৌধুরী, মঈনউদ্দিন আহমেদ (মিন্টু), প্রাক্তন পরিচালক এম. মাহাবুব চৌধুরী, অঞ্জন শেখর দাশ, সাইফ উল্লাহ মনসুর, এ.এম. শফিউল করিম (খোকন) প্রমুখ।

এছড়া বৈঠকে সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আকতার হোসেনসহ বিভিন্ন পোশাক শিল্পের মালিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে বৈঠকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম কমিশনার মো. তারেক হাসান, যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাজিউর রহমান মিয়া, উপ-কমিশনার ইমাম গাজ্জালী এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

আলোচনায় বিজিএমইএ সভাপতি এস এম মান্নান (কচি) পোশাক শিল্পের সার্বিক কার্যক্রম নিরবিচ্ছিন্নভাবে পরিচালনা করার জন্য কাস্টমস সংক্রান্ত পরিষেবাগুলো আরও দ্রুত এবং সহজতর করা, বিশেষ করে আমদানিকৃত কাঁচামাল, যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি দ্রুত খালাসসহ ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলো সহজীকরণ করার উপর জোর দেন।

তিনি বলেন, পোশাক শিল্পের রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে কাস্টমস সংক্রান্ত প্রক্রিয়াগুলোর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এবং এ সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে যেয়ে শিল্পে উৎপাদন খরচ বেডড়ে যায়, ব্যবসায়িক প্রক্রিয়াগুলোতেও অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব হয়।
তিনি আরও বলেন, বিশেষ করে যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা বিরাজ করছে এবং বিশ্বব্যাপী পোশাক পণ্যের জন্য চাহিদা ও ব্যয় কমা সত্ত্বেও পণ্যের দরপতন হচ্ছে ও বিপরীতে শিল্পের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, এরকম প্রেক্ষাপটে শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা ধরে রাখেতে কাস্টমস প্রক্রিয়াগুলোকে সহজীকরণ, দ্রুততর ও হয়রানিমুক্ত করা অপরিহার্য। বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক পোশাক বাজারে টিকে থাকার জন্য লিড টাইম কমানোর বিকল্প নেই।

সভায় কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পোশাক শিল্পের অবদানের কথা স্বীকার করে বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলকে আশ্বস্ত করে বলেন, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করতে একনিষ্ঠভাবে কাজ করছে। কাস্টমস হাউজ চট্টগ্রাম বিজিএমইএ প্রতিনিধিদলের সুপারিশগুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d