রাজধানীতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ৩ হত্যাকাণ্ড
রাজধানীর দুটি এলাকায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে তিনটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটনা ঘটেছে সুত্রাপরে; মোহাম্মদপুরে আরেক ঘটনায় দুজন খুন হন।
সূত্রাপুর এলাকায় ছিনতাইকারীরা ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন জিন্নাহ (৫২) নামে এক অটোরিকশাচালক। মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় পূর্ব শত্রুতা জের ধরে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় নাসির ও মুন্না নামে দুই যুবক হত্যার শিকার হন।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জিন্নাহ ও নাসিরের মরদেহ এখানকার মর্গে আনা হয়েছে। মুন্নার মৃতদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মর্গে নেওয়া হয়।
এ তিন হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে দিবাগত রাতের মধ্যে।
নিহত অটোরিকশাচালক জিন্নাহর গ্রামের জামালপুরে সরিষাবাড়ি উপজেলার মালিপাড়ায়। তিনি জুরাইন আলম মার্কেটের পাশে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। তার ছেলে মো. ইউসুফ জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়েছিলেন তার বাবা। রাত ৩টার দিকে তার মোবাইল ফোন নম্বরে এক ব্যক্তি কল করে জানান, জিন্নাহ ছিনতাইকারীর কবলে পড়েছিলেন। তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তারা ঢাকা মেডিকেলে গিয়ে জিন্নাহকে মুমূর্ষ অবস্থায় দেখেন। শনিবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিন্নাহর মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর আগে তিনি জানিয়েছেন, সূত্রাপুর লোহারপুর এলাকায় যাত্রীবেশে তার রিকশায় দুজন ছিনতাইকারী উঠেছিলেন। তারাই তাকে ছুরিকাঘাত করে।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. ফারুক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টায় ঢামেকে মৃত্যু হয় নাসির বিশ্বাসের। তিনি মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থান এলাকায় হামলার শিকার হন। একই ঘটনায় আহত মুন্না শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
নিহত নাসিরের বড় ভাই ইসলাম বিশ্বাস জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার পশ্চিম বালিগ্রামে। বর্তমানে নাসির হাজারীবাগ রায়েরবাজার বাড়ৈইখালী ১২ নম্বর রোডের একটি বাসায় বসবাস করতেন। তিনি সে রাজমিস্ত্রি ছিলেন। তিন বোন, ৫ ভাইয়ের মধ্যে নাসির ছিলেন চতুর্থ। সন্ধ্যার দিকে তিনি বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। পরে জানা যায়, কে বা কারা তাকে কুপিয়ে আহত করেছে।
এ সময় ছুরিকাঘাত মুন্নাও আহত হন। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইফতেখার হাসান জানান, দুই গ্রুপের মারামারি ঘটনায় নাসির ও মুন্না নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন মারা গেছে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে আর একজন মারা গেছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে। নিহত দুই যুবক একই গ্রুপের। ধারণা করা হচ্ছে, আগের কোনো বিরোধের জের ধরে তাদের হত্যা করা হয়েছে। প্রতিপক্ষরা তাদের একসঙ্গে দেখতে পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। নিহত মুন্নার নামে ছয়-সাতটি মামলার খবর পাওয়া গেছে।