রাজধানীতে পুলিশের ভয়ংকর ‘টর্চার সেল’, আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়
রাজধানীর পল্লবী থানার কয়েক পুলিশের সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্যবসায়ী আদালতকে জানিয়েছেন, কমান্ডো স্টাইলে তাকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা। তার অভিযোগ, স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে আটকে রেখে নির্যাতন করে আদায় করা হয়েছে বড় অঙ্কের মুক্তিপণ। তিনি অভিযোগ করেন, কমিউনিটি সেন্টারটি ‘টর্চার সেল’ বা ‘মিনি থানা’ নামে পরিচিত স্থানীয়দের কাছে।
গত ৭ এপ্রিল, বেলা ২টা ৭ মিনিটে রাজধানীর পল্লবীর ৬ নম্বর সেকশন, সি- ব্লকের ১৪ নম্বর সড়কের ২৫৭/২৫৮ নম্বর ভবনে পুলিশ সদস্য পরিচয়ে সাদা পোশাকে প্রবেশ করেন বেশ কয়েকজন। এর প্রায় ১০ মিনিট পর, ভবনটির ছয় তলার ভাড়াটিয়া আব্দুর রহিম নামের এক ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসায়ীকে সঙ্গে নিয়ে যান। এসময় তাদের সঙ্গে ছিল ওয়াকিটকি ও অস্ত্র। গোপন ক্যামেরায় এমনটি দেখা যায়।
সবশেষে কয়েকটি মোটরসাইকেল যোগে ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আব্দুর রহিমের বর্ণনায় জানা যায় ঘটনার ভয়াবহতা। ওই ব্যক্তিদের প্রথমে ভুয়া পুলিশ মনে হলেও এক পর্যায়ে তিনি নিশ্চিত হন তারা সত্যিকারের পুলিশ এবং পল্লবী থানায় কর্মরত।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী জানান, মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার মেরিমেন্ট কমিউনিটি সেন্টারে অন্ধকার কক্ষে আটকে রেখে চালানো হয়, অমানবিক নির্যাতন, চাওয়া হয় মুক্তিপণ।
আব্দুর রহিম বলেন, ‘তারা জানান পল্লবী থানা থেকে এসেছেন। তোর বাসায় সোনা-গহনা আছে না? ওই কমিউনিটি সেন্টারে একটি অন্ধকার রুমে আমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে যেতে নরমালি যে কারো ভয় লাগবে। তারা সেটাকে মিনি থানা হিসেবে ব্যবহার করত। আমি থাকা অবস্থায় সেখানে আমার মতো দুই/তিন জনকে আটকে আদায় করা হয় মুক্তিপণ। আমার কাছে ১৫ লাখ টাকা চেয়েছিল। পরে আকুতি মিনতি করে ৫০ হাজারে দফারফা হয়।’
এ ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আব্দুর রহিম। গেল মামলাও করছেন আদালতে। যাতে আসামি করা হয়েছে পল্লবী থানার এসআই শুভ, এসআই জিতু, এএসআই ফয়সালসহ ৬ পুলিশ সদস্যকে।