কক্সবাজার

রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মাদ্রাসা সুপারের অপসারণ দাবি

দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাং হামিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার নুরুল আলমের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার হারবাং ইউনিয়নের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন ইউনিয়নের উত্তর নুনাছড়ি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউসুফের ছেলে মো. শাহজাহান।

মানববন্ধনে মো. শাহজাহান বলেন, নুরুল আলম একজন শিবির ক্যাডার ছিলেন। বর্তমানে জামায়াতের রাজনীতিতে তিনি সক্রিয়। সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। ২০১৪ সালে মাদরাসা সুপার পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে একের পর এক বিতর্কিত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। মাদ্রাসায় সুপার পদের প্রভাব খাটিয়ে নুরুল আলম শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রদ্রোহী কাজে যুক্ত করা, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বায়তুলমাল নামের চাঁদা উত্তোলন করে তা রাষ্ট্রবিরোধী কাজে ব্যয় করেন। মাদ্রাসার অফিসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি নামিয়ে ফেলার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

তিনি আরও বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুর পরে গায়েবানা জানাযার নামাজ আদায়কে কেন্দ্র করে পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত নুরুল আলম। এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় আসামি তিনি।

এ ব্যাপারে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড কক্সবাজার জেলা সভাপতি নুরুল হাকিম নকি বলেন, নুরুল আলম বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সক্রিয় নেতা। তিনি মাদ্রাসা সুপারের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে ওই প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করে আসছেন। মাদ্রাসা অফিস থেকে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি নামিয়ে ফেলার মতো গুরুতর অপরাধ করেছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনো তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

উল্লেখ্য, গত ১৫ আগস্ট যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাযাকে কেন্দ্র করে চকরিয়ায় গাড়ি ভাঙচুর ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় দুটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সুপার নুরুল আলম।

এ বিষয়ে মাদরাসা সুপার নুরুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসছে। আজকের এই মানববন্ধন ষড়যন্ত্রের অংশ।

দেশের আলেম সমাজের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করাই তাদের নিয়মিত কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মের পক্ষে কাজ করা যদি অপরাধ হয় তাহলে আমি অপরাধী।

জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন বলেন, সুপার নুরুল আলমের বিরুদ্ধে পূর্বেও অনেক অভিযোগ ছিল। কিছু মামলাও চলমান রয়েছে। আদালতে যদি তার অভিযোগ প্রমাণিত হয় আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নিব।

মানবন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের কক্সবাজার জেলার নেতৃবৃন্দ ও হারবাং এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d