চট্টগ্রাম

রোজা ঘিরে বিকল্প পেশায় বাড়তি আয়

চট্টগ্রাম নগরের আমবাগান এলাকার বাসিন্দা আব্দুস শুক্কুর। পেশায় ভ্যানচালক। তাঁর ভ্যানে কোনো মালামাল নয়, থরে থরে সাজানো পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, ছোলাসহ নানা ইফতার সামগ্রী। রমজান ঘিরে তাঁর ব্যবসার ধরণ বদলে গেছে। রোজা নিয়ে দিনের বেলা ভ্যান চালানো সম্ভব নয় বলে আয়ের এমন বিকল্পপন্থা আব্দুস শুক্কুরের।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে তো সারাদিন ভ্যান চালাতে পারতাম। এখন রোজা থেকে ভ্যান চালানো কষ্টকর। রোজা রাখবো তাই অন্য উপায় নিয়েছি। ঘর থেকে বানিয়ে দেয়, বিকেলে আমি সামনে বসে বিক্রি করি। এতে কোনোমতে চলে।’

রোজাদার শুক্কুরের জন্য আয়ের বিকল্পপন্থা হলেও গৃহিণী সাজেদা খাতুনের বাড়তি আয়ের মোক্ষম সময়। দুই সন্তান নিয়ে স্বামীর অভাব অনটনের সংসারে সহযোগিতার হাত বাড়াতে নগরের উত্তর কাট্টলী এলাকায় রেললাইনের অদূরে টেবিল নিয়ে ইফতারের পসরা সাজিয়েছেন তিনি। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যা বেচাকেনা হয়, তাতে ‘কোটিপতি’ বনা না গেলেও রোজার মাসে সংসারের বাড়তি খরচের কিছুটা যোগান হবে বলে মনে করেন গৃহিণী সাজেদা বেগম।

ভ্যানচালক আব্দুস শুক্কুর, সাজেদা খাতুনের মতো নগরের বিভিন্ন ফুটপাতে, অলিগলিতে ইফতারির পসরা সাজিয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। কারো কাছে ভাজাপোড়া, কারো কাছে শসা, লেবু, ধনেপাতা, পুদিনা পাতা। স্থানীয় বাসিন্দা কিংবা কর্মব্যস্ত নানা শ্রেণির মানুষ এসব দোকানের নিয়মিত ক্রেতা। তাদের কথা মাথায় রেখেই দাম ও পছন্দের ইফতার সামগ্রীর পসরা বসান দোকানিরা। দুপুর থেকে বেচাকেনা শুরু হয়ে চলে ইফতারের আগমুহূর্ত পর্যন্ত।

বিশ্ব কলোনী এলাকার নিতায় লাল দাশ পেশায় নৈশ্যপ্রহরী। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও দুয়েক টাকা কমে আশপাশের দোকান থেকে ইফতার সামগ্রী কিনে আনেন। বিশ্বকলোনীরে একটু ভেতরে দিকে গিয়ে আরো দুয়েকটা লাভে বিক্রি করেন। স্থানীয় বাসিন্দারাই তার গ্রাহক । জানালেন, এতে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা বাড়তি আয় হয় তাঁর।

এসব দোকানে ২০ টাকায় এক চামচ ছোলা, ৫ টাকায় পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ, সবজি বড়াসহ সর্বনিম্ন ৫ টাকার নানা ইফতারপণ্য বিক্রি হচ্ছে। ১৫ টাকায় ডিম চপ, জিলাপি মিলছে ৫ টাকায়।

পোশাক শ্রমিক রাজিয়া বলেন, বাসায় ভাজাপোড়া বানানো কষ্ট। অল্প কয়েকটা কিনে নিয়ে কোনরকম ইফতারটা সারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d