শুভ জন্মদিন সাবেক মেয়র, আ জ ম নাছির
১৯৫৭ সালের ১৪ অক্টোবর জন্ম নেওয়া জননেতা আ জ ম নাছির উদ্দীন আজ ৬৭ বছরে পা দিয়েছেন। ২০১৩ সাল থেকে দেশের অন্যতম প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আ জ ম নাছির উদ্দীন।
চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের প্রয়াত বাবা সৈয়দ মঈনুদ্দিন হোসাইন ছিলেন একজন শিক্ষানুরাগী। মা ফাতেমা জোহরা বেগম বার্ধক্যজনিত কারণে ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি ৯২ বছর বয়সে মারা যান।
১৯৭৩ সালে সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিএ পাস করেন আ জ ম নাছির। বিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। স্কুলশিক্ষার্থী হিসেবে যোগ দেন উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মিছিলে। আশির দশকের শুরুতে আ জ ম নাছির রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৭৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং একই সঙ্গে নগর ছাত্রলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হন।
পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে ১৯৮০ এবং ১৯৮২ সালে চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৩ এবং ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর আ জ ম নাছির নগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন এবং নভেম্বর ২০১৩ সালে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিলের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সমর্থনে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সহ সভাপতি এবং চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদকসহ অগণন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত আছেন।
রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘রাজনীতিতে আমার হাতেখড়ি ১৯৬৯ সালে। আমি যখন চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের যে ছাত্র সমাজ ছিলো তারা তখন দেশকৃষ্টি আন্দোলন করেছিল। যেটি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছিল। তখন ছাত্রলীগের নেতারা প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানায়। তারই ধারাবাহিকতায় শহর ছাত্রলীগের একদল নেতা সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। তারা শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে ছাত্রদের সামনে আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন ও মিছিলে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। আমি তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে সেই মিছিলে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। বলা যায় ঐদিনই আমার রাজনীতিতে হাতে খড়ি।’
ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়া নিয়ে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়েই মূলত আমি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে পুরোপুরি সম্পৃক্ত হই। তখন আমি চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ডিগ্রিতে অধ্যয়ন করি। ১৯৭৬ এর প্রথম দিকে কলেজের লিচুতলায় আমরা কয়েকজন সমবেত হয়ে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করি। বলা যায় তখন চলমান মার্শাল ল বলবৎ থাকা সত্বেও আমরা বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে ঝটিকা মিছিল করে চন্দনপুরা দিয়ে বের হয়ে যাই। বলা যায় তখন থেকেই সচেতনভাবেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আমি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় হই।’
চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়া প্রসঙ্গে আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘তখন আমরা যারা চট্টগ্রাম কলেজে ছাত্রলীগ করতাম একটি শ্রেণিকক্ষে সম্মেলনের ব্যবস্থা করেছিলাম। সেখানে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটির মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছিল। সেখানে আমি সর্বসম্মতিক্রমে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হই।’
‘১৯৭৯ সালের দিকে আমি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হই। তখন সভাপতি ছিলেন আবদুল মান্নান (যিনি বগুড়া থেকে একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন) আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাহাঙ্গীর কবির নানক; যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। এরপর নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে সিটি মেয়র হয়েছি। আজকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমি।’
এদিকে জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, শুভানুধ্যায়ীদের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন আ জ ম নাছির। তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভরিয়ে তুলেছেন তার সতীর্থরা।