শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাসের সময়ও পেলেন না চার সাবেক এমপি!
চট্টগ্রাম বন্দরে শুল্কমুক্ত সুবিধায় সাবেক এমপিদের আমদানি করা চারটি বিলাসবহুল গাড়ি আটকে দিয়েছে কাস্টমস। এর মধ্যে দুটি গাড়ির ‘বিল অব এন্ট্রি’ দাখিল করা হলেও অন্য দুটির কোনো কাগজপত্র এখনও জমা দেননি সংশ্লিষ্টরা। এদিকে সংসদ বাতিল হয়ে যাওয়ায় গাড়িগুলো খালাস করতে প্রায় ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক পরিশোধ করতে হবে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম বন্দরে আটকা পড়া চারটি গাড়ি আমদানি করা হয়েছে জাপান ও সিঙ্গাপুর থেকে। গাড়িগুলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের ফয়জুর রহমান, লক্ষীপুর-৩ আসনের গোলাম ফারুক পিংকু, নাটোর-১ আসনের আবুল কালাম, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনের মুজিবুর রহমান মঞ্জুর নামে আমদানি করা। গাড়ির নাম ও বিবরণ জানাতে পারেনি কাস্টমস। তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাড়িগুলোর ইঞ্জিন ক্যাপাসিটি ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার সিসি। তাই এই ধরনের গাড়ির ওপর ৮১০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্কারোপ হয়ে থাকে।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ-কমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘চার গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হলেও তারা বর্তমানে এমপি নেই। তাই গাড়িগুলো খালাস করতে শুল্ক দিতে হবে। এর মধ্যে দুটি গাড়ির বিল অব এন্ট্রি করা ছিল। আমরা বিষয়টি নিয়ে গত ২১ আগস্ট চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে একটি চিঠি দিয়েছি। তবে গাড়িগুলো কার বা কি গাড়ি তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না।’
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফাইজুর রহমান বলেন, ‘সংসদ ভেঙে দেওয়ায় শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি খালাসের সুযোগ কোনো নেই। আইন অনুযায়ী স্বাভাবিক হারে শুল্ককর পরিশোধ করেই গাড়িগুলো ছাড়িয়ে নিতে হবে। যদি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ি খালাস না হয়, তাহলে নিয়মানুযায়ী সেগুলো নিলামে চলে যাবে।’
প্রসঙ্গত, এমপিদের জন্য প্রণোদনা হিসেবে ১৯৮৮ সালের ২৪ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ শুল্কমুক্ত গাড়ির সুবিধা দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এই আইনে সংসদ সদস্যরা প্রতি পাঁচ বছরে একবার শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ পান। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবনায় এই আইনের ফাঁকে এমপিরা গত ১৫ বছরে ৫ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা রাজস্ব হারানোর কথা উল্লেখ করে এই আইনের সংশোধন করে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেন। কিন্তু তা সংসদে গৃহীত হয়নি।