শোক কাটিয়ে না উঠতেই নেপালে আবারও ভূমিকম্প!
যেখানে শুক্রবার রাতের ভয়াবহ ভূমিকম্পের শোকই এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি নেপাল সেখানে আবারও ভূমিকম্প আঘাত হানলো দেশটিতে। তবে এবারের ভূমিকম্পে কোনো প্রাণহানি বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। নেপালি জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, রোববার ভোরে ৩ দশমিক ৬ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প হয়েছে। এর কেন্দ্রস্থল ছিল রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ১৬৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে।
শুক্রবারের ভূমিকম্পের পর নেপালে এখানো বিধ্বস্ত এলাকায় চলছে উদ্ধারকাজ। ধ্বংসস্তূপ থেকে বেরিয়ে আসছে একের পর এক মরদেহ। এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল রোববার নেপালে আবারও ভূমিকম্পের এ ঘটানাটি ঘটেছে। সোমবার (৫ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে নেপালে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়। এই ভূমিকম্পে ১৫৭ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে আরও শতাধিক।
নেপালি জাতীয় ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এ ভূমিকম্পটির কেন্দ্রবিন্দু ছিল জাজারকোট জেলায়। নেপাল ছাড়াও শক্তিশালী এই ভূমিকম্প ৫০০ কিলোমিটার দূরের দিল্লি ও উত্তর ভারতে অনুভূত হয়েছে।
শনিবার সকালে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ তৎপরতা তদারকি করতে ১৬ সদস্যের সেনা মেডিকেল টিম নিয়ে ঘটনাস্থল গেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল। এর আগে এ ঘটনার পরপর এক এক্সবার্তায় (সাবেক টুইটার) ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল। একই সঙ্গে নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে তাৎক্ষণিক উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
উল্লেখ্য, নেপালে ভূমিকম্প সাধারণ ঘটনা। প্রায়ই এই দেশে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। নেপালি সরকারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের ১১তম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হলো নেপাল।
গত ২২ অক্টোবর নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ও এর আশপাশের জেলায় ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। তার আগে ৩ অক্টোবর নেপালে মাত্র ২৫ মিনিটের ব্যবধানে ৫ দশমিক ৩ এবং ৬ দশমিক ৩ মাত্রার দুটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এসব ভূমিকম্প নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর পাশাপাশি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেও অনুভূত হয়। তবে এসব ভূমিকম্পের ঘটনায় এখনো কোনো হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
২০১৫ সালে নেপালে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। সেবারের ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এ ছাড়া আহত হয়েছিল আরও ২২ হাজার মানুষ। ৫ লাখ বাড়িঘর ধ্বংস হওয়া ছাড়াও প্রায় ৮ হাজার স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছিল।