‘শ্রম দিলেই পেটে ভাত জুটে’
লক্ষ্মীপুর: ১ মে (বুধবার) দুপুর, তপ্ত রোদ। তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একটি জ্বলন্ত ইটভাটার বয়লারে আগুন দেওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিক মহিউদ্দিন। যেখানে তীব্র তাপদাহের কারণে স্বাভাবিক তাপমাত্রা অনেক বেশি, সেখানে ইটভাটার জ্বলন্ত চুল্লি থেকেও আরও বেশি পরিমাণে তাপমাত্রা নির্গত হচ্ছে। সবমিলিয়ে ইটভাটার ওপরের অবস্থা একেবারে ওষ্ঠাগত।
দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ইটভাটায় আগুন মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করছেন মহিউদ্দিন। মৌসুমে ছয় মাস থাকেন জ্বলন্ত ইটভাটার চুল্লীর ওপর। বাকি সময়টা অন্য পেশায় থাকেন। কাজটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, জীবনের ঝুঁকি থাকে ভাটায় আগুন দেওয়ার কাজে। অসাবধান হলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে জ্বলন্ত চুল্লিতে।
মহিউদ্দিনের দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা কাটে জ্বলন্ত ভাটার চুল্লীর ওপর। কাজের ফাঁকে ভাটার চুল্লিতেই চলে প্রতিদিনকার রান্না-বান্না। তার সঙ্গে আরও ১১ জন শ্রমিক পালাক্রমে কাজ করেন ইটভাটার আগুন শ্রমিক হিসেবে। এই ভাটা শ্রমিকের কাছে শ্রমিক দিবস নিয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই বলতে পারেননি। ‘শ্রমিক দিবস’ বলে একটা দিন আছে তা তিনি জানেনই না।
বলেন, দিবস দিয়ে কি হবে? শ্রম দিতে পারলে মূল্য পাই। না দিতে পারলে রোজগার বন্ধ। তাই আমাদের জন্য কোনো দিবস নেই। শ্রমের বিনিময়ে আমাদের পেটে ভাত জুটে।
ভাটা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভাটার একেকজন আগুন মিস্ত্রির মাসিক বেতন পড়ে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর ইট তৈরি ও ইট বহনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা পান মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
শ্রমিকরা জানান, বর্তমান বাজার দর হিসেবে যা একেবারেই অপ্রতুল। শ্রমের একটি অংশ খেয়ে নিচ্ছে তাদের মাঝিরা। ঘাম ঝরাচ্ছে শ্রমিকরা, আর লাভবান হচ্ছেন মাঝিরা।