জাতীয়

সংবিধান সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে: উপদেষ্টা হাসান আরিফ

সংবিধান সংস্কার নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ বিষয়ক জাতীয় কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

উপদেষ্টা হাসান আরিফ বলেন, ছাত্র-জনতা কোন প্রক্রিয়ায় সংবিধান সংস্কার চায়, সেজন্য তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। তারা কি নতুন কোনো সংবিধান চায় নাকি আগের সংবিধানকে সংস্কার চায়, সেটা ছাত্র-জনতাই বলতে পারবে। আমরা আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেব।

অন্তর্বর্তী সরকারের এক মাস পূরণ হলো, এ সময়ে রাষ্ট্র সংস্কারের যে বিষয়গুলো এসেছে, সেগুলোর কোনোটার কিছু দৃশ্যমান হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাসান আরিফ বলেন, আমূল সংস্কার করতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু-স্বাভাবিক না। এই বাহিনীকে জনসেবার পরিবর্তে তাদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি হত্যা হয়েছে। তার বিনিময়ে আমরা এখানে আছি। তাদের (ছাত্র-জনতা) সবার প্রত্যাশা সংস্কারের দাবি পূরণে এখানে আছি। ছাত্র-জনতা-শ্রমিক, তারা হচ্ছে দেশের মূল মালিক। তাদের দাবি হচ্ছে সংস্কার। তারা যেসব জায়গায় সংস্কারের দাবি করেছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে সবক্ষেত্রেই সংস্কারের প্রয়োজন।

উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার হলো চলমান প্রক্রিয়া। ১৫-১৬ বছর এটা স্তব্ধ হয়েছিল। সেটা ১৫ ঘণ্টা, ১৫ দিনে অর্জিত হয়ে যাবে; ১৫ বছরের ঝঞ্ঝাট পরিষ্কার হয়ে যাবে, সেটা স্বাভাবিক নয়। সংস্কার কাজটা ধীরে ধীরে এগোতে থাকবে। সবচেয়ে বড় সংস্কার দাবি আসছে সংবিধানের। আমাদের পুরোনো যে সংবিধান ১৯৭২ সালের, আদৌ কি সেই সংবিধান আছে আজকে! ১৫তম সংশোধনীতে দেখেছি অন্তত ৫০টি জায়গায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাহলে ১৯৭২ সালের সংবিধান কোথায়! আমরা যদি পেছনের দিকে যেতে চাই, তাহলে চতুর্থ সংশোধনীতে গিয়ে আটকে যাবো, সেটি কি কাম্য? সেখানে বাকশালের কথা বলা হয়েছে, যেখানে ওয়ান পার্টি গভর্নমেন্ট; সেটা তো সংবিধানেই ছিল। সেটা কি সংবিধানসম্মত? ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ লোক শহীদ হয়েছেন এই চতুর্থ সংশোধনীর জন্য? অবশ্যই না।

তিনি বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে দেখছি সংবিধানের বাইরে ও ভেতর থেকে মানুষকে জিম্মি করে রাখার প্রক্রিয়াগুলো চলেছে, সেটা কি একদিনে সম্ভব হবে? আজকে ৫২ বছরের বিষয় এক মাসে কতটুকু দৃশ্যমান হলো, আমি মনে করি এটা সঠিক প্রশ্ন নয়। আমরা সংস্কার শুরু করেছি কি না, এটা হলো সঠিক প্রশ্ন।

সংস্কারে কোন বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বা প্রাধান্য দিচ্ছেন; এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, এটা এত বড় বা এত ব্যাপক; এখানে বাছাই করা মতো সুযোগ এখনো হয়নি। সব বিষয়ই ধরতে হচ্ছে। সংবিধান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আরও অন্যান্য বিষয় যেমন আইন, রেগুলেটরি কমিশন করা যায় কিনা সেটা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সুতরাং এটা চলমান প্রক্রিয়া। কোনটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি সেটা সুনির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব না।

তাহলে কি বলা যায় যে, সংবিধান সংস্কারের কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার; এমন প্রশ্নের জবাবে হাসান হারিফ বলেন, যেহেতু এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, তাই বলা যাবে না। তবে আমাদের সংবিধান সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আর এটা অনেক বড় বিষয়, সংবিধান সংশোধন করতে গেলে আগে যাচাই-বাছাই করতে হবে, আলোচনা করতে হবে। বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। একটা নতুন পার্লামেন্ট করতে হবে। আসলে বিষয়টি ব্যাপক।

তিনি বলেন, আলোচনা শুরু হয়েছে। আমাদের ছাত্র-জনতার কাছে যেতে হবে। তারা কি সংবিধান সংস্কার চায় নাকি নতুন একটা সংবিধান চায়; নাকি পুরোনো সংবিধানকে সংস্কার করে আরও বেটার করতে চায়; এটা ছাত্র-জনতার কাছ থেকেই আসতে হবে। তাদের কাছ থেকেই বা সমন্বয়কদেরই দিক-নির্দেশনা দিতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d