সড়কে নামলো নতুন এসি বাস ‘চট্টলা চাকা’
দীর্ঘ আট বছর পর ফের বন্দরনগরীর সড়কে নেমেছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নতুন বাস সার্ভিস। আজ (মঙ্গলবার) সকাল ৮টা থেকে নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বহদ্দারহাট, জিইসি, ইপিজেড ও কাটগড় মোড় পর্যন্ত চলাচল করছে এই বাস।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টলা চাকা এক্সপ্রেস সার্ভিসের জিএম মোহাম্মদ আরিফ। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, আজ সকাল ৮টা থেকে চট্টগ্রামের সড়কগুলোতে চলাচল করছে ‘চট্টলা চাকা এক্সপ্রেস’।
এর আগে সোমবার নগরীর হোটেল আগ্রাবাদে ফিতা কেটে নতুন এই বাস সার্ভিসের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন নগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মাসুদ আহাম্মদ, বিআরটিএ চট্টগ্রামের পরিচালক মো. মাসুদ আলম এবং নিটল মটরস লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানবীর শহীদ। আবৃত্তিশিল্পী জেবুন নাহার শারমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুর আলম চৌধুরী।
মেয়র মো. রেজাউল করিম বলেন, এসি বাস সার্ভিস চট্টগ্রাম নগরীর পরিবহন সেক্টরে একটি নতুন সংযোজন। আমি মনে করি এটা একটা সময়োপযোগী পদক্ষেপ। কারণ সবকিছু পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা চাই পরিবহনেও একটা পরিবর্তন আসুক। এসি বাস সার্ভিস চালুর মাধ্যমে এই পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। যে দেশের কমিউনিকেশন যত উন্নত সে দেশের অর্থনীতি তত সমৃদ্ধ। আজকে চট্টগ্রাম পরিবরহন জগত আরও এগিয়ে গেল।
পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর অনুরোধ জানিয়ে মেয়র বলেন, পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফেরানোর কথা বলেন সবাই। পরিবহনের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধু পুলিশ ডিপার্টমেন্টে বা সিটি করপোরেশনের নয়। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের গণপরিহন আমরা সুন্দর কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে পারলে গণপরিবহন আরো সমৃদ্ধ হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় বলেন, মানুষের চাহিদা এবং সামর্থ্য আছে, কিন্তু নগরীতে সেরকম যান না থাকার কারণে তাদের মধ্যে একটা হতাশা তৈরি হয়েছে। আমি আশা করছি এই বাস সার্ভিসের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরের নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটবে। আর যারা সামর্থ্যবান আছেন তারা এই ব্যবসায় নেমে আসবেন। আধুনিক বাস আসলে লক্কর-ঝক্কর বাস এমনিতেই বাদ পরে যাবে।
শান্তি এক্সপ্রেস (প্রা.) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, কাউন্টারগুলো যাত্রীর চাপ অনুযায়ী হলুদ এবং লাল ক্যাটাগরিতে ভাগ করে দেওয়া হবে। এসি বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার প্রজ্ঞাপন না থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কার্ড সিস্টেম করা হবে। ওই কার্ড দিয়ে যাতায়াত করলে তারা নির্দিষ্ট পরিমাণে ভাড়া ছাড় পাবে।
সভাপতির বক্তব্যে শান্তি এক্সপ্রেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মনজুরুল আলম চৌধুরী বলেন, আমরা ১১টি গাড়ির পারমিট পেয়েছি। ইতোমধ্যে চালকদের পরীক্ষা নিয়ে তাদের নিয়োগ দিয়েছি। আমাদের চারজন চালক সবসময় স্ট্যান্ডবাই থাকবে। যাতে চালক সংকট না হয়। তাছাড়া চালকদের জন্য নির্ধারিত ড্রেস থাকবে। নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গাড়ি ছাড়া হবে। কোনো যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে পারবে না এবং সিটের বাইরে যাত্রী নেওয়া হবে না। এপসের মাধ্যমে ই-টিকেটের মাধ্যমে টিকেট গ্রহণ করবে যাত্রীরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) মো. তারেক আহেম্মদ, উপকমিশনার (বন্দর) মোস্তাফিজুর রহমান, উপকমিশনার (ট্রাফিক-দক্ষিণ) এনএম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম জেলা মালিক গ্রুপের সৈয়দ হোসেন, আহাসান উল্লাহ, মনছুর রহমান, নুরুল ইসলাম, জাফর চৌধুরী, আনোয়ারুল আজিম, রুহুল আমিন, ফারুক খান, জাফর আলম, মেট্রোপলিটন মালিক গ্রুপের আমজাদ হাজারী, বেলায়েত হোসেন, আকরাম শেখ, তরুণ দাস, শহিদুল ইসলাম, সিরাজদৌল্লাহ, বদিউল আলম, শ্রমিক ফেডারেশনের মো. মুছা, অলি আহাম্মদ, কামাল উদ্দিন, মনছুর আলম, শামসুল আলম, নুরুল ইসলাম, আবছার, ইয়াকুব প্রমুখ।