কক্সবাজার

সমুদ্রতীরে পাহাড় কেটে আবাসন প্রকল্প

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কোলঘেঁষা হোটেল-মোটেল জোনে বহুল আলোচিত ৫১ একর পাহাড় কাটা এখনো বন্ধ হয়নি। চলছে জমি কেনাবেচা। বাস্তবায়ন হচ্ছে না উচ্চ আদালতের নির্দেশ। সরকারি জমি বিক্রি করে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে পরিবেশের মামলা থাকলেও তদন্ত সীমাবদ্ধ।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, পাহাড়ি বনভূমিতে আবাসনের কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু এই আইন ভঙ্গ করছেন খোদ সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীরা। কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গড়ে তুলছেন আবাসন প্রকল্প। প্রতিদিনই দেদার কাটা হচ্ছে পাহাড়।

অথচ এ প্রকল্পটি বাতিলের পাশাপাশি ওই বনভূমি এলাকার সব বসতি উচ্ছেদ করতে এক দশক আগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন উচ্চ আদালত। তবে এখনও জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এ বিষয়ে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।

সরেজমিন দেখা গেছে, চারদিকে টিন আর দেয়ালঘেরা জেলা প্রশাসনের আবাসন প্রকল্পের মূল ফটকের সামনে বিশাল সাইনবোর্ড। লেখা ‘সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা আবাসন, এই ৫১ একর জমি বর্ণিত আবাসনের জন্য সেলামি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছে।’

আবাসন প্রকল্পের উত্তর পাশে স্থাপনা নির্মাণের জন্য বিশাল পাহাড় কেটে ফেলা হচ্ছে। ৮ থেকে ১০ শ্রমিক এ পাহাড় কাটছে। এ সময় কোনো শ্রমিক কথা বলতে রাজি হননি।

আবাসন প্রকল্পে পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ‘পাহাড়টি কাটছেন আমাদের সমিতির এক সদস্য, তিনি এখন চাকুরি থেকে অবসরে গেছেন।’

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, এ আবাসন প্রকল্পের কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অভিযোগে এক বছর আগে মামলা করা হয়েছে। সেটা নিয়ে তদন্ত চলছে। এর মধ্যে আবার নতুন করে কেউ পাহাড় কাটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. জাহিদ ইকবাল বলেন, পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আদালতের নির্দেশ লাগে না, দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। কে কাটছে তা শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d