সরকারি আবাসনে নতুন দিগন্ত
একপাশে বিশাল খেলার মাঠ অন্যপাশে সুইমিংপুল।চারদিকে একই মাপের ধাপে ধাপে দাঁড়িয়ে দৃষ্টিনন্দন ভবন।একটি কিংবা দুটি নয়, সারিসারি নয়টি বহুতল ভবন। সাদা রঙের এসব উঁচু বিলাসবহুল ভবন যেন আকাশ ছুঁয়েছে। দেখে মনে হতে পারে, উন্নত কোন বিশ্বের চিত্র এটি।
স্বপ্নের মতো মনে হলেও এমন দৃশ্যই এখন শোভা পাচ্ছে নগরীর আগ্রাবাদের সিজিএস কলোনিতে। যেখানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে আধুনিক ৬৮৪ ফ্ল্যাটের বহুতল নয় ভবন। এমন আধুনিক সরকারি আবাসন চট্টগ্রামে এটি প্রথম। যার দুয়ার খুলবে আগামী ২৮ অক্টোবর। ফলে চট্টগ্রামে অবস্থানরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসনে নতুন এক দিগন্ত যোগ হবে।
জানা যায়, আগামী ২৮ অক্টোবর দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ উদ্বোধন করতে চট্টগ্রামে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চট্টগ্রাম সফর উপলক্ষে এ দিন বিভিন্ন প্রকল্পও উদ্বোধন করবেন সরকার প্রধান। যার মধ্যে ৪৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত চট্টগ্রামের বৃহৎ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন প্রকল্পটিও উদ্বোধন করবেন তিনি। এ নিয়ে ইতোমধ্যে প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে থাকা চট্টগ্রাম গণপূর্ত বিভাগ-৪ এর নির্বাহী প্রকৌশলী জহির উদ্দিন আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ আগামী ২৮ অক্টোবর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আধুনিক ৬৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। ইতোমধ্যে প্রকল্পের শতভাগ কাজ শেষ হয়েছে। উদ্বোধনের মাধ্যমে তা হস্তান্তর করা হবে। সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রেখে এসব ফ্ল্যাট নির্মিত হয়েছে।’
প্রসঙ্গত : ২০১৮ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নগরীর আগ্রাবাদস্থ সিজিএস কলোনিতে জরাজীর্ণ ১১টি ভবনের স্থলে ৯টি বহুতল আবাসিক ভবনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৬৮৪টি ফ্ল্যাট নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ৩৯৫ কোটি ৪৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালের শুরুর দিকে এসব ফ্ল্যাট নির্মাণের কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে করোনার কারণে কাজে ধীরগতি নামে। সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদকাল বৃদ্ধিার পাশাপাশি বাড়ে বরাদ্দও।সর্বশেষ ৪৮২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয় বহুতল আধুনিক এ ভবনগুলো নির্মাণে। প্রকল্পটি শেষ করতে ইতোমধ্যে ব্যয় হয়েছে ৪৭২ কোটি ২৩ লাখ টাকা। ইতোমধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা নিরসনের এ প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। ফলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন সমস্যা অনেকটাই দূর হচ্ছে।
গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ জানান, ৯টি পৃথক ২০ তলা বিশিষ্ট এসব বহুতল ভবনের মধ্যে ৬০৫ বর্গফুটের ১৫২টি ফ্ল্যাট, ৮৫০ বর্গফুটের ৩০৪টি ফ্ল্যাট এবং ১ হাজার বর্গফুটের ২২৮টি ফ্ল্যাট রয়েছে। এসব ভবনে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক নির্মাণসামগ্রী, উন্নত ফিটিংস ও আধুনিক প্রযুক্তি। প্রতিটি ভবনের ভেতরে-বাইরে রয়েছে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, জরুরি ফায়ার এক্সিট, সুপরিসর বারান্দা ও কমন স্পেস। খেলার মাঠ, সুইমিংপুলসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধা রাখা হয়েছে।