সাতকানিয়ায় ট্রাক চালকের ঘরে ডাকাতি, স্বর্ণালংকার-নগদ টাকা লুট
সাতকানিয়ায় এক ট্রাক চালককে বেঁধে তাঁর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বড়দুয়ারা গ্রামের মুহাম্মদ মোছলেম ড্রাইভারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে । এ সময় ডাকাত দল গৃহকর্তাসহ দুজনকে বেঁধে লুটপাট চালায়। ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে তাঁদের হাত পা বেঁধে আলমিরা ও অন্যান্য স্থানে রক্ষিত ৭ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভোরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
মোছলেম ভোলা সদরের চর রামিসা ১ নম্বর ওযার্ডের বাসিন্দা হলেও ওই এলাকায় জায়গা কিনে নিজস্ব বাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। তিনি পেশায় একজন ট্রাক চালক। ভুক্তভোগী মোছলেমের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ আশিক নামের এক নির্মাণ শ্রমিককে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত দুইটার দিকে ৫-৬ জনের একটি ডাকাত দল প্রাইভেটকারে করে এসে পশ্চিম বড়দুয়ারা জানাজার মাঠে গাড়ি পার্কিং করে রাখে। এ সময় কার চালক নাসির উদ্দিন কেরানীহাট থেকে তার গাড়ির কাজ সেরে বাড়ির কাছে জানাজার মাঠে পার্কিং করতে গেলে এক অপরিচিত এক লোককে দেখেতে পান। নাসির ওই লোকের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছেন বলে জানান। মুহুর্তের মধ্যে কিছু বুঝে উঠার আগেই অন্ধকার থেকে বের কয়েকজন লোক নাসিরকে মারধর করে হাত পা ও চোখ বেঁধে তার কাছে থাকা নগদ ৭০ হাজার টাকা ও ২টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। পরে ডাকাতরা নাসিরকে মাঠের পাশে মহিউদ্দিন চৌকিদারের দোকানে সাঁটার খুলে ভেতরে বন্দি করে রাখে। এর কিছুক্ষণ পরই ডাকাতরা উত্তর পাশে ৫০ মিটার দূরে মোছলেম ড্রাইভারের বাড়িতে হানা দেয়।
ভুক্তভোগী মোছলেম বলেন, কয়েকদিন আগে ভোলার গ্রামের বাড়ি থেকে মাসহ আত্মীয়-স্বজনরা বাড়িতে বেড়াতে আসে। রিবারের সদস্যরা রাতের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। রাত ৩টার দিকে ঘরের ছাদে লাগোয়া গাছ দিয়ে ৫-৬ জনের সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে প্রথমে বাড়ির মহিলাদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে দরজা খুলে। পরে ডাকাত আমার রুমে প্রবেশ করে আমাকে হাত পা বেঁধে অস্ত্রের মুখে বাড়ির সবাইকে জিম্মি করে ঘরের কাজের জন্য রাখা নগদ আড়াই লাখ টাকা, ৭ ভরি স্বর্ণ ও ৭টি মোবাইল সেটসহ মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। আমার ছোট ভাই আকতার হোসেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে চাকরি করেন। রাতেই তার মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্দেজনক একজনকে আটক করেন।
এ ব্যাপারে জানতে সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। ওসি (তদন্ত) আতাউল হক চৌধুরী বলছেন, এটি দস্যুতার ঘটনা। তিনি বলেন, ভোরে পশ্চিম বড়দুয়ারায় একটি বাড়িতে দস্যুতার খবর পাওয়ার সাথে সাথে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বাড়ির মালিক মোছলেম পুলিশকে জানিয়েছেন তাকে হাত পা বেঁধে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। এরপর থেকে আমিসহ পুলিশের একাধিক টিম ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।