সুন্দরবনে এখন দলে দলে হরিনের দেখা মেলে
আগে নাকি বনের বাঁকে বাঁকে বাঘের দেখা মিলত, বাঘ কম দেখা গেলেও এখন দলে দলে হরিণের দেখা মিলছে। বনের নদী ও খালের পাড়ে হরিণের অবাধ বিচরণ জানান দিচ্ছে হরিণ বেড়েছে পৃথিবীর সেরা ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে। সুন্দরবনে বেশ কিছু পর্যটন স্পটে এখন হরহামেশাই হরিণ দেখতে পান পর্যটকেরা। দূর থেকে মানুষের শব্দ পেলেই ঘন বনে লুকোবার চেষ্টা করে লাজুক এ প্রাণীটি।
কয়েক বছরে সুন্দরবনে হরিণের সংখ্যা বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগ, গবেষক ও বনজীবীরা।
সুন্দরবনে কী পরিমাণ হরিণ আছে জানতে চাইলে খুলনা অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, ২০২১ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জার্মানির কেএফডব্লিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ও ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অব নেচারের (আইইউসিএন) সার্বিক সহযোগিতায় সুন্দরবনে হরিণসহ ৫টি প্রাণীর সংখ্যার উপর জরিপ চালানো হয়েছে।
এ জরিপের বরাত দিয়ে তিনি জানান, বর্তমানে সুন্দরবনে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৬০৪টি হরিণ রয়েছে। এর আগে ২০০৪ সালে হরিণের সংখ্যা ছিল ৮৩ হাজারটি। সেই হিসেবে ১৯ বছরের ব্যবধানে সুন্দরবনে হরিণের বেড়েছে ৫৩ হাজার ৬০৪টি।
হরিণ বৃদ্ধির কারণ হিসেবে বন কর্মকর্তারা বলেন, র্যাব, কোস্টগার্ড, বিজিবি ও বন বিভাগের নিয়মিত টহলের কারণে হরিণ শিকারের সুযোগ কমে গেছে। সুন্দরবনে রাসমেলা বন্ধ হয়ে যাওয়া ও সুন্দরবন জলদস্যু মুক্ত হওয়ায় হরিণ শিকার কমেছে। এছাড়া সুন্দরবনে অভয়ারণ্য বৃদ্ধি ও আবাসস্থলের উন্নয়ন ঘটায় বন্যপ্রাণীর প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সে কারণেও হরিণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক রানা দেব বলেন, সুন্দরবনে আগের চেয়ে হরিণের চোরা শিকার কমে গেছে। এতে হরিণের সংখ্যা বেড়েছে। এছাড়া বনে পর্যাপ্ত গাছ পালা আছে যার কারণে হরিণের খাবারের সংকট নেই। খাবার পানির জন্য মিষ্টি পানির পুকুর কেটে দেওয়া হয়েছে। দুবলারচরে রাস মেলা হয় না। সীমিত আকারে পূজা হয়। যেখানে শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যান। আগের মতো মানুষের ভিড় হয় না। রাসমেলার সময় এখন আগের মতো হরিণ শিকার হয় না। এসব কারণে বনে হরিণের সংখ্যা বেড়ে গেছে।