সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা শেষ করতে মণ্ডপে মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা
আগামী (২০ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজা উপলক্ষে সারাদেশে মণ্ডপে মণ্ডপে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। পূজা কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বেশ সজাগ।
ঢাকাসহ সারাদেশে ৩২ হাজার ৪০৭টি মণ্ডপের নিরাপত্তা নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। পূজার সময় কঠোর নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
পুলিশ সদরদপ্তর থেকেও সব জেলায় জেলায় নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও নিরাপত্তার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে যেন পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনা না ঘটে তাই সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা শেষ করতে বদ্ধপরিকর সরকার।
মণ্ডপে মণ্ডপে উৎসবের আনন্দ বিরাজ করলেও তারপরও শঙ্কায় রয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নেতারা বলছেন, এবছর জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির মধ্যে গুজব নিয়ে বেশি শঙ্কা রয়েছে। কারণ দুই বছর আগে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় দুর্গাপূজায় গুজবকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, প্রতিটি মণ্ডপে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা ও টহল পুলিশের প্রয়োজনীয় নম্বর প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়েছে। যাতে যে কোনো সময় যোগাযোগ করা যায়। এছাড়া পূজার দিনগুলোতে প্রত্যেক মণ্ডপে স্থায়ীভাবে পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের নেতারা বলছেন, এবছর জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সম্প্রতি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির মধ্যে গুজব নিয়ে বেশি শঙ্কা রয়েছে। কারণ দুই বছর আগে ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর কুমিল্লায় দুর্গাপূজায় গুজবকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছিল।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।
পরামর্শগুলো হলো-
পূজামণ্ডপে আগত নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীদের জন্য পৃথক প্রবেশপথ ও প্রস্থান পথের ব্যবস্থা রাখা। পূজামণ্ডপে কোনো ব্যাগ, থলে বা পোটলা নিয়ে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকা। পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন করা। গুরুত্বপূর্ণ পূজামণ্ডপে আর্চওয়ে গেট স্থাপন করা।
পূজামণ্ডপে ও প্রতিমা বিসর্জনস্থলে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা। সম্ভব হলে স্ট্যান্ডবাই জেনারেটর, চার্জার লাইট, হ্যাজাক লাইট ইত্যাদির ব্যবস্থা রাখা।
পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা। স্বেচ্ছাসেবকদের আলাদা পোশাক, দৃশ্যমান পরিচয়পত্র ও স্বেচ্ছাসেবক লেখা আর্মড ব্যান্ড প্রদান করা।
পূজা চলাকালে আতশবাজি ও পটকা ফুটানো থেকে বিরত থাকা।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন- ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার অথবা ব্লগ ইত্যাদি এবং মোবাইল ফোনের মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যেন অমূলক ঘটনা বা গুজব সৃষ্টি করে কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সামাজিক শান্তি বিনষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকা। এ ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হলে পুলিশকে জানানো।
পূজা উদযাপনকালে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা। আজান ও নামাজের সময় মাইক ও বাদ্য বাজানো বন্ধ রাখা।
প্রতিমা বিসর্জনের সময় শোভাযাত্রার নির্ধারিত রুট ব্যবহার করা। পূজামণ্ডপে শোভাযাত্রা এবং প্রতিমা বিসর্জনের সময় দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশ সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কমিউনিটি পুলিশিং কমিটির সদস্যদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করা। রাতের বেলায় পূজামণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।