সূরা ওয়াকিয়ার ফজিলত সম্পর্কে যা বলেছেন আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.
সূরা আল-ওয়াকিয়াহ। পবিত্র কোরআনুল কারিমের ৫৬তম সুরা। এই সুরার আয়াত সংখ্যা ৯৬। আর রুকু আছে ৩টি। সুরা ওয়াকিয়াহ মক্কায় অবতীর্ণ হয়। সুরা আল ওয়াক্বিয়ার অর্থ নিশ্চিত ঘটনা। মুফাসসিরে কিরাম বলেন, ওয়াকিয়া অর্থ কিয়ামতও বটে।
সূরা ওয়াকিয়ার ফজিলত অনেক বেশি। এই সূরা প্রতিদিন মাগরিবের পরে পাঠ করা হয়। এই সুরা পাঠ করলে কখনো অভাব আসে না। দরিদ্রতা কখনো গ্রাস করতে পারে না।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি প্রতিদিন রাতে সুরা ওয়াকিয়াহ তেলাওয়াত করবে, তাকে কখনো দরিদ্রতা স্পর্শ করবে না।’ (বাইহাকি, শুআবুল ঈমান; হাদিস, ২৪৯৮)
ইবনে কাসির ও ইবনে আসাকিরের বরাতে তাফসিরে মাআরিফুল কোরআনে আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন অন্তিম রোগশয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমিরুল মুমিনীন হজরত উসমান গনী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাকে দেখতে গেলেন। এ সময় তাদের মাঝে শিক্ষাপ্রদ কিছু কথোপকথন হয়। তাদের সেই কথোপকথন এখানে উদ্ধৃত করা হলো-
উসমান গনী রা.- আপনার অসুখটা কী?
ইবনে মাসউদ রা.- আমার পাপসমূহই আমার অসুখ।
উসমান গনী রা.-আপনার বাসনা কী?
ইবনে মাসউদ রা.- আমার পালনকর্তার রহমত কামনা করি।
উসমান গনী রা.- আমি আপনার জন্য কোনো চিকিৎসক ডাকব কী?
ইবনে মাসউদ রা.- চিকিসকই আমাকে রোগাক্রান্ত করেছেন।
উসমান গনী রা.- আমি আপনার জন্য সরকারি বায়তুলমাল থেকে কোনো উপঢৌকন পাঠিয়ে দেব কি?
ইবনে মাসউদ রা.- এর কোনো প্রয়োজন নেই।
উসমান গনী রা.- উপঢৌকন গ্রহণ করুন। তা আপনার পর আপনার মেয়েদের উপকারে আসবে।
বনে মাসউদ রা.- আপনি চিন্তা করছেন যে, আমার মেয়েরা দারিদ্র ও উপবাসে পতিত হবে। কিন্তু আমি এমনটা ভাবি না। কারণ, আমি আমার মেয়েদের জোর নির্দেশ দিয়ে রেখেছি যে, তারা যেন প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করে। কারণ, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি-
‘যে ব্যক্তি প্রতি রাতে সূরা ওয়াকিয়া পাঠ করবে, সে কখনো উপবাস করবে না। (তাফসিরে মাআরিফুল কোরআন, ৮/২৬৫)