সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়াদের তালিকা প্রকাশ করুন: হাফিজ
সেনাপ্রধানের উদ্দেশ্যে মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সেনাবাহিনীর আচরণ এমন হওয়া উচিত যাতে মনে না হয় তারা জনগণের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছে। অবিলম্বে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৪৮৭ জনের তালিকা প্রকাশ করুন। তালিকা প্রকাশে ভয়ের কী আছে। বিপ্লব সফল করতে হলে এই দুর্বৃত্তদের দমন করতে হবে।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকালে শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবের লক্ষ্য পূরণের জন্য আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাহায্য-সহযোগিতা দেব। কিন্তু তাদের বিপ্লবের মর্মবাণী উপলব্ধি করতে হবে। যারা বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছে তাদের নিয়ে আপনারা সরকার পরিচালনা করুন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, অনতিবিলম্বে বিতর্কিত ব্যক্তিদেরকে সরিয়ে প্রয়োজন হলে উপদেষ্টা পরিষদে আরও ছাত্রদের নেন। যারা বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছে তাদের নেন। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের প্রয়ো্জন নেই। যারা তাকিয়ে তাঁকিয়ে দেখে, দুঃসময় চুপ থাকে আর বিজয়ের পরে এসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায় ওই ধরনের বুদ্ধিজীবীদের আমাদের প্রয়োজন নেই। সুতরাং এই অবস্থার অবসান চাই। প্রকৃত বিপ্লবীদের নিয়ে এই সরকার গঠিত হোক সেটাই আমরা কামনা করি।
তিনি বলেন, ২০ দিন অতিবাহিত হয়েছে এখন পর্যন্ত মনে হয় না বিপ্লবীদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কেবল মাত্র আফিস নজরুল ছাড়া এই বিপ্লবে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে কাউকে দেখিনি। এখানে আমার সাথে আজকে উপস্থিত ইশতিয়াক আজিজ উলফাতসহ মুক্তিযোদ্ধারা তারা ৫ আগস্টের আগে এই সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন, শহীদ মিনারে জনতার কাতারে গিয়ে শামিল হয়েছেন। এছাড়া যারা ১৬ বছর ধরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৩২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে সংগঠনটির সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ শেরে বাংলা নগরে জিয়ার কবরে পুস্পমাল্য অর্পণ করেন। এই সময়ে বিএনপির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীনসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় নেতারা ছিলেন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, বিপ্লব কিন্তু সম্পূর্ণ হয় নাই। এখনও বিপ্লব থমকে আছে। পুলিশি স্টেট যারা নির্মাণ করেছে বাংলাদেশে, যারা আয়নাঘরের মতো গৃহীত প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, যারা আয়নাঘর নামে একটি নির্যাতনকারী টর্চার সেল বানিয়েছে, বহু আন্দোলনকারী, সাধারণ মানুষ ও বিরোধী দলের রাজনীতিবিদের গুম করেছে, হত্যা করেছে তারা বহাল তৈবিয়তে নিজ নিজ পদে এখনো আছে। প্রত্যেকটি জেলায় পুলিশ কর্মকর্তারা আগের মতোই আছে। তারাই আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্যদের আশ্রয় দিয়ে রেখেছে।
আয়নাঘরে বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, সরকারের উচিত ছিল সাংবাদিকদের সেখানে নিয়ে গিয়ে দেখানো। ঘৃণীত দল কীভাবে তারা নিরহ মানুষদের অত্যাচার করেছে, হত্যা করেছে।