স্কুল ছুটি দিয়ে সবাইকে নিয়ে দাওয়াত খেতে গেলেন প্রধান শিক্ষক!
স্কুল ছুটি দিয়ে কর্মচারীর বাড়িতে দাওয়াত খেতে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কেএম আব্দুর রবের বিরুদ্ধে।
শনিবার (১৮ মে) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই স্কুলে কর্মরত (নৈশ প্রহরী) উপজেলার গুনাইগাছা গ্রামের বাসিন্দা আতাউর রহমানের বাড়িতে স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল কর্মচারীদের নিয়ে দাওয়াত খেতে যান প্রধান শিক্ষক।
সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে এভাবে স্কুল ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে শুরু করে এলাকার সচেতন মানুষ।
দুপুর ২টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্কুলের প্রধান গেট বন্ধ। ভেতরে নতুন ভবন নির্মাণ কাজের জন্য কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক অবস্থান করছেন। যে সময় শিক্ষার্থীদের ক্লাস হওয়ার কথা সেই সময় স্কুলে নেই কোনো শিক্ষার্থী। প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে শুরু করে প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ ছিল তালাবদ্ধ।
চলতি পথে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, সকালের কয়েকটা ক্লাস হওয়ার পরেই দুপুর ১টার আগে স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী আতাউর রহমান এবার হজে যাবেন। এ জন্য শনিবার নিজ বাড়িতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। সকালে কয়েকটা ক্লাস নেওয়ার পরেই তড়িঘড়ি করে দাওয়াতের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুর রবের নির্দেশে স্কুল ছুটি দেওয়া হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিজেই সকল শিক্ষক ও কর্মচারীদের নিয়ে দাওয়াত খেতে যান। ক্লাস বাদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের এমন স্বেচ্ছাচারিতা এবং ছুটি দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন অভিভাবক অভিযোগ করে বলেন, এমনিতেই নানা কারণে বছরের ভাগ বেশিরভাগ সময় স্কুল ছুটি থাকে। বাচ্চাদের পড়াশোনা ঠিক মতো হয় না। তারপর এভাবে ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ায় বেশ কয়েকটা ক্লাস করতে পারলো না শিক্ষার্থীরা। আর হুট করে ছুটি দেওয়ায় অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানদের নিতে আসতে পারেননি। এতে বিপাকে পড়ে বেশ কিছু শিক্ষার্থী। এটা কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাজ হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তারা।
জানতে চাইলে চাটমোহর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে এম আব্দুর রব বলেন, ‘আমার এক স্টাফ হজে যাবে, সে জন্য দাওয়াত খেতে এসেছি। আসলে প্রতিষ্ঠানের কোনো স্টাফের দাওয়াত খেতে এভাবেই যাওয়া হয়। বরাবরই তাই হয়ে আসছে।’
স্কুল বন্ধ করে এভাবে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে মেয়েরা তো দুষ্টু। স্কুল চালু রাখা ঠিক হবে না। তাই ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে আসা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে চাটমোহর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী বলেন, ‘স্কুল ছুটি দিয়ে দাওয়াত খেতে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি প্রধান শিক্ষকের সাথে কথা বলছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’