স্ত্রীর পরিকল্পনায় পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন স্বামী
চট্টগ্রাম : সীতাকুণ্ডে দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তের হাতে খুন হওয়া ব্যবসায়ী আলমগীর হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। স্ত্রীর পরিকল্পনায় পরকীয়া প্রেমিকের হাতে খুন হয়েছেন আলমগীর। স্ত্রী রোমানা আক্তার (১৯) নিজেই বিষয়টি পুলিশের কাছে শিকার করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সীতাকুণ্ড থানার ওসি মো. কামাল উদ্দিন।
তিনি জানান, আমরা এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে কাজ করলে আলমগীরের স্ত্রীকে সন্দেহ হয়। একপর্যায়ে ২৭ ডিসেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় রোমানা পুলিশের কাছে স্বামী হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে জবানবন্দি দেন।
রোমান পুলিশকে জানান, ৭-৮ মাস আগে সাকিবের সঙ্গে তার সম্পর্ক হয়, কিন্তু এসএসসিতে ফেল করায় পরিবার তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। স্বামী আলমগীর তাকে স্মার্টফোন কিনে দিলে সেটি দিয়ে পুরোনো প্রেমিক সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু হয়। একসময় পরকীয়া প্রেমিক সাকিব রোমানাকে তার কাছে চলে যেতে বললে রোমানা বলেন, ‘কীভাবে যাবো, আমার তো বিয়ে হয়ে গেছে। সাহস থাকলে আমার স্বামীকে মেরে ফেলো, তারপর না হয় আমি তোমার কাছে চলে আসবো। অন্যথায় আমি কীভাবে আসবো?’
আর এসব কথার আগে সাবেক প্রেমিক রোমানাকে বলেছিলেন, ‘তুমি আমার কাছে আসতে চাইলে আমাকে কী করতে হবে? তোমার স্বামীকে মেরে ফেললে হবে?’ উত্তরে রোমানা হ্যাঁ বলার সঙ্গে সঙ্গে পরকীয়া প্রেমিক সাকিব রোমানার স্বামী আলমগীরকে হত্যার নেশায় মত্ত হয়ে ওঠেন। আলমগীরকে অনুসরণ করতে শুরু করেন সাকিব। গত ২৪ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪০ মিনিটে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামের হায়দার আলী জামে মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায় আলমগীরকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান সাকিব। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুরো উপজেলায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
আলমগীরের পরিবারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, তার সঙ্গে কারও কোনো বিরোধ নেই। রাজনীতির সঙ্গেও তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুরুতে ছিনতাইকারীরা তাকে মেরেছে এমন কথা এলাকায় ছড়িয়ে পড়লেও আলমগীরের সঙ্গে থাকা টাকা-পয়সা, মোবাইল অক্ষত থাকার খবরে তা দূর হয়ে যায়।
ওসি মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘আলমগীরকে হত্যার পর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রোমানা আক্তার। আর ঘটনার কিছু আলামতে আমাদের সন্দেহ হওয়ায় তাকে আমরা নজরদারিতে রেখেছিলাম। শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হয়ে তাকে আমরা আটক করে থানায় নিয়ে আসি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিকের সঙ্গে যোগসাজশে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি। পরে ২৭ ডিসেম্বর রোমানা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।