স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে বাসায় খালেদা জিয়া
স্বাস্থ্যের কয়েকটি পরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য সময়ের আলোকে জানান, ফলোআপ চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। যেসব পরীক্ষা বাসায় করানো সম্ভব হয় না; সেগুলো হাসপাতালে করাতে হয়। তার শারীরিক অবস্থা অপরিবর্তিত আছে।
গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে রওনা হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসন রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে পৌঁছান। পরে রাতে তিনি বাসায় ফেরেন। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, হেলথ চেকআপের জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কয়েকটি জরুরি পরীক্ষা করা হয়েছে। এটা মেডিকেল বোর্ডের সুপারিশেই করা হয়। সব টেস্টের রিপোর্ট আসার পর মেডিকেল বোর্ড বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
দীর্ঘ ৫ মাস এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর গত ১১ জানুয়ারি গুলশানের বাসায় ফেরেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বাসায় মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। ৭৯ বছর বয়সি খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া এবং দেশের বাইরে না যাওয়ার শর্তে ২০২০ সালের মার্চে সরকারের নির্বাহী আদেশে সাময়িক মুক্তি দেওয়া হয়। তার সেই সাময়িক মুক্তির মেয়াদ প্রতি ছয় মাস পরপর বাড়ানো হলেও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।
মুক্তি পাওয়ার পর কোভিড, লিভার জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে পাঁচ দফা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে বিএনপি নেত্রীকে। সর্বশেষ গত বছর ৯ আগস্ট তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলে।
গত অক্টোবরে মেডিকেল বোর্ড সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার লিভারের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়। দ্রুত বিদেশে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে তার লিভার প্রতিস্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। এরপর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে আবারও বিদেশ নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয় তার পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে। তবে আইনে সে সুযোগ না থাকায় এ অনুমোদন দেয়নি সরকার। এ চেষ্টার মধ্যে তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসার পাশাপাশি বিদেশ থেকেও চিকিৎসক এসে তার চিকিৎসা দেন।