ধর্ম

হজ কবুলের জন্য আর্থিক স্বচ্ছতা যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ

মহান রবের সান্নিধ্য লাভের জন্য বিশ্ব মুসলিমকে একত্রিত করে যেসব ইবাদত, তার অন্যতম হজ। হজকে কেন্দ্র করে পুরো বিশ্বের মুসলমান একত্রিত হন মক্কা নগরীতে।

হজের আমল, বায়তুল্লাহর তাওয়াফ-জিয়ারত, সাফা-মারওয়ার সায়ী, মিনা-আরাফা, মুজদালিফায় অবস্থানের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চেষ্টা করেন বিশ্ব মুসলিম।

হজ করতে এসে সবাই ভুলে যান জাতপাতের ভেদাভেদ। এখানে সমাজের উচ্চ, মধ্য, নিন্মবিত্তের কোনো তফাৎ নেই। সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে হজের সবগুলো বিধান পালন করেন একনিষ্ঠ চিত্তে।

হজ্জে মাবরুর বা কবুল হজের বিনিময়ে আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে গুনাহ থেকে মুক্তি এবং জান্নাত লাভের সুসংবাদ দিয়েছেন।

এক হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরা করো, কেননা এ দুটি দারিদ্র্য ও গুনাহ এমনভাবে দূর করে, যেভাবে হাঁপর লোহা, স্বর্ণ ও রৌপ্যের ময়লা দূর করে। আর হজে মাবরুর (মকবুল হজ)-এর বিনিময় জান্নাত ব্যতীত কিছুই নয়।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৮৮৭)

গুনাহ থেকে মুক্ত করে নিজেকে পুতঃপবিত্র করে এমন হজ্জে মাবরুর বা কবুল হজ একজন মুসলিমের একান্ত কামনা-বাসনার বস্তু।

হজ আর্থিক ও শারিরীক ইবাদত। এই দুয়ের সমন্বয়ে হজ পালন করতে হয়। তাই হজ কবুলের জন্য আর্থিক স্বচ্ছতা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কোনো ব্যক্তি অবৈধ আয় বা সুদ, ঘুষ, অন্যায়ভাবে দখল করা কোনো সম্পদে হজ করলে তা আল্লাহ তায়ালার দরবারে কবুল হবে না।

কারণ, ইবাদত কবুলের জন্য আয়-উপার্জন ও খাবার হালাল হওয়া শর্ত। হাদিস শরিফে এসেছে,

আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেন, হে লোক সকল! আল্লাহ পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করে না। আল্লাহ তায়ালা মুমিনদেরকে সেই আদেশ করেছেন, যে আদেশ করেছেন তিনি রাসূলগণকে।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎকর্ম কর, তোমরা যা কর, সে সম্বন্ধে আমি অবহিত।’ (সূরা মুমিনুন, আয়াত : ৫১)

তিনি আরও ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদেরকে আমি যে সব পবিত্র বস্তু দিয়েছি, তা থেকে আহার কর।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৭২)

এরপর নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন, যে দীর্ঘ সফর করে, যার এলোমেলো চুল ধুলায় ধূসরিত সে আকাশের দিকে দু হাত তুলে বলে, হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রতিপালক! অথচ তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, পোশাক-পরিচ্ছদ হারাম এবং তার শরীর গঠিত হয়েছে হারামে। অতএব, তার দোয়া কীভাবে কবুল করা হবে? (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ২৯৮৯)

তাই হজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত কবুল হজের জন্য বৈধ আয়ের সম্পদ হওয়া জরুরি। কেউ অবৈধ সম্পদের মাধ্যমে হজ করলে সে হজের সওয়াব পাবে না। এবং তার হজও কবুল হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d