খেলা

২ ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ বাংলাদেশের

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ২ ম্যাচে পরে ব্যাট করে সহজেই জিতেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে আগে ব্যাট করে বাংলাদেশ। এই ম্যাচেও সহজ জয়ের পথেই ছিল টাইগাররা। ৯১ রানের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল প্রতিপক্ষের ৮ উইকেট। তবে নবম উইকেটে ৩০ বলে ৫৪ রানের জুটিতে বাংলাদেশ শিবিরে ভয় ধরান ফারাজ আকরাম ও ওয়েলিংটন মাজাকাদজা। তবে শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি এই জুটি।

আজ রোডেশিয়ানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় এসেছে ৯ রানে। প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানে থামে টাইগাররা। জবাব দিতে নেমে ২০ ওভার ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রানে থামে জিম্বাবুয়ে। তাতে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২ ম্যাচ হাতে রেখেই নিশ্চিত করল নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

১৬৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে জিম্বাবুয়ে প্রথম উইকেট হারায় দলীয় ১৬ রানে। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দেন জয়লর্ড গাম্বি (৯)। তিনে নামা ব্রায়ান বেনেটও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ম্যাচে সুযোগ পেয়েই বেনেটকে ফেরান তানজিম হাসান সাকিব। ৩৩ রানের মাথায় আবারও সাইফউদ্দিনের আঘাত। ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে যেন বেরই হতে পারছেন না ক্রেইগ আরভিন। দলের তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে ফেরেন তিনি। ব্যাটিংয়ে এই সিরিজে জুত করতে পারছেন না জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজাও। এই ম্যাচেও মাত্র ১ রান করে বিদায় নিলেন তিনি। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের বলে উইকেটের পেছনে জাকের আলীকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

জিম্বাবুয়ে এরপর ধারাবাহিকভাবেই উইকেট হারাতে থাকে। একপাশ আগলে রাখা তাদিওয়ানাশে মারুমানির প্রতিরোধ ভাঙে ১১তম ওভারে। অনেকদিন পর বোলিংয়ে এসেই বাজিমাত করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার বলে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন মারুমানি। ১৩তম ওভারের প্রথম বলে ক্লাইভ মাদান্দেকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। সাতে ব্যাটিংয়ে নামা জোনাথন ক্যাম্পবেল দারুণ কিছুরই ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তবে ৯১ রানের মাথায় তানভির ইসলামের স্পিনে হার মানেন জিম্বাবুয়ের সাবেক তারকা ব্যাটার অ্যালিস্টার ক্যাম্পবেলের ছেলে। ১০ বলে সমান ২টি করে চার ও ছক্কায় ২১ রান করেন তিনি। পরের ওভারের প্রথম বলে লুক জংওয়েকে ফেরান রিশাদ হোসেন।

৯১ রানে ৮ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ও ফারাজ আকরাম। এই দুজন দলকে নিয়ে যান ১৪৫ রান পর্যন্ত। শেষ ২ ওভারে জিম্বাবুয়ের দরকার ছিল ২৭ রান। এই দুজন যেভাবে ব্যাটিং করছিলেন, তাতে সেই লক্ষ্য অসম্ভব মনে হচ্ছিল না। তবে ১৯তম ওভারে মাত্র ৬ রান দেন তাসকিন। সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারের প্রথম বলে ওয়েলিংটন ফিরলে ভাঙে এই জুটি। শেষ পর্যন্ত ১৯ বলে ৩৪ রানে আকরাম অপরাজিত থাকেন। তবে দলকে জেতাতে পারেননি।

৩ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে ৪২ রান দেন সাইফউদ্দিন। ৪ ওভারে সমান ২৬ রান দেওয়া তানভির ও তানজিম সাকিব নেন ১টি করে উইকেট। ১ উইকেট নেওয়া মাহমুদউল্লাহ ১ ওভারে ১ রান দিয়েছেন। রিশাদ ৩ ওভারে ২ উইকেট নিলেও রান দিয়েছেন ৩৮।

এর আগে, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় শুরু হয় ম্যাচ। শুরুটা ভালোই করেছিলেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। তবে বাজে ফর্মের ধারা অব্যাহত রেখে দলীয় ২২ রানের মাথায়ই বিদায় নেন লিটন (১৫ বলে ১২)। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে সরাসরি বোল্ড হন এই ওপেনার। বাজে ফর্ম অব্যাহত রইল অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তরও। জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক রাজার বলে মাত্র ৪ রান করেই সরাসরি বোল্ড হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

এরপর তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে তানজিদ দলকে এগিয়ে নিতে থাকলেও শেষরক্ষা করতে পারেননি। তার ধীরগতির ইনিংস থামে দলীয় ৬০ রানে। ফারাজ আকরামের বলে ক্লাইভ মাদান্দের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। এরপর জাকেরকে নিয়ে দুর্দান্ত জুটি গড়েন হৃদয়। মাত্র ৫৭ বলে যোগ করেন ৮৭ রান। ব্লেসিং মুজারাবানির করা ১৯তম ওভারে ১৪৭ রানের মাথায় হৃদয় ফিরলে ভাঙে এই জুটি। ৩৮ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৫৭ রান করেন হৃদয়। এর আগে, টি-টোয়েন্টিতে তার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান ছিল ৪৭। প্রথম মাত্র ৬৩ রান করা বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে যোগ করে ১০২ রান।

একই ওভারে ফেরেন জাকেরও। ৩৪ বলে ২টি চার ও ২ ছক্কায় তিনি করেন ৪৪ রান। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৬৫ রানে থামে বাংলাদেশ। উইকেটে ৯ রানে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ৬ রানে রিশাদ হোসেন অপরাজিত ছিলেন। জিম্বাবুয়ের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে সবচেয়ে সফল বোলার মুজারাবানি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d