৭২ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়ল বিদেশি জাহাজ
চট্টগ্রাম বন্দরে আটকের দুইদিন পর ৭২ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়েছে লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী জাহাজ এক্স-প্রেস লোৎসে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মধ্যরাতে জাহাজটি কলম্বো বন্দরের উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে গেছে।
বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থরক্ষা) আইন লঙ্ঘন করে ওয়েভার সনদ ছাড়া পণ্য পরিবহন করার দায়ে জাহাজটি গত ১৫ নভেম্বর আটক করেছিল মার্কেন্টাইল মেরিন অফিস (এমএমও)। জাহাজটির কাছে জরিমানা বাবদ এমএমও’র পাওনা ছিল ৭২,২৫,৭৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার জরিমানা পরিশোধের পর এমএমও জাহাজটিকে চট্টগ্রাম বন্দর ত্যাগের অনুমতি দেয়।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১,৪৫০ টিইইউ কন্টেইনার রপ্তানি পণ্য নিয়ে ১৫ মে বিকাল সাড়ে তিনটায় কলম্বো বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করার কথা ছিলো এক্স-প্রেস লোৎসের।
জাহাজের শিপিং এজেন্ট সি কনসোর্টিয়াম বাংলাদেশ লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক ক্যাপ্টেন এএস চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দুইদিন আটকে থাকার কারণে জাহাজের ভাড়া (চার্টার হায়ার) বাবদ ৪০ হাজার ডলার ক্ষতির মুখে পড়েছি আমরা। আগামী ১৯ মে জাহাজটি কলম্বো বন্দরে পৌঁছে রপ্তানি পণ্য ইউরোপ-আমেরিকাগামী মাদার ভেসেলে ওঠার কথা ছিল। এখন মাদার ভেসেল মিস করার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, ওয়েভার সনদের নামে বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজকে জরিমানা করা এবং জাহাজ আটকে রাখার ঘটনা নজিরবিহীন। কোনো একটি পক্ষকে সুবিধা দিতে আইনের অপব্যবহার করে বিদেশি পতাকাবাহী জাহাজের চলাচলকে হুমকির মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরে চলাচলকারী অন্তত ৫টি জাহাজ প্রত্যাহার করেছে শিপিং কোম্পানিগুলো।
বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থ রক্ষা) আইন ২০১৯ অনুযায়ী, জাহাজে পরিবহন করা পণ্যের ৫০ শতাংশ অবশ্যই স্থানীয় জাহাজে বহন করতে হবে।
তবে, স্থানীয় জাহাজে জায়গার ঘাটতি থাকলে, বাকি পণ্য পরিবহনের জন্য বিদেশি শিপিং এজেন্টদের বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র নিতে হবে।
মার্কেন্টাইল মেরিন অফিসের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, অনিয়মের অভিযোগে একাধিকবার সতর্ক করা হয়েছিল জাহাজটির শিপিং এজেন্টকে। বাংলাদেশের পতাকাবাহী (স্বার্থরক্ষা) আইন না মানার করণে এই জাহাজের এজেন্টকে জরিমানাও করা হয়েছিল। জরিমানা পরিশোধ না করা এবং অনিয়মের কারণে এবার এক্সপ্রেস লোৎসে–কে আটক করা হয়। জরিমানা পরিশোধ করায় জাহাজটিতে বন্দর ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কন্টেইনার শিপিং লাইনের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৯০টি ফিডার জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর যেমন কলম্বো, সিঙ্গাপুর, পোর্ট কেলাং, তানজুম পেলেপাস বন্দরে চলাচল করে। এরমধ্যে দেশীয় জাহাজ রয়েছে ৮টি। বাকিগুলো বিদেশি পাতাকাবাহী জাহাজ।