পুরুষের চেয়ে দ্বিগুণ তালাক দিচ্ছেন নারীরা, বদলেছে কারণও
নুসরাত ফারজানা, দেড় বছর আগে বিয়ে করেন। বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষ করে এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে চাকরি পান। সংসার ও চাকরি একসঙ্গে বেশ চলছিল। একসময় স্ত্রীর চাকরিটা মেনে নিতে পারছিলেন না স্বামী। তিনি চাচ্ছিলেন, নুসরাত চাকরিটা ছেড়ে দিয়ে সংসারে মনোযোগী হোক। শুরু হয় সংসারে অশান্তি। শেষমেশ চলতি বছরের শুরুর দিকে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। বাবার বাড়ি ফিরে আসেন নুসরাত। তবে, চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিটা।
ঠুনকোসহ ছোট-বড় নানা কারণে রাজধানীতে তালাকের সংখ্যা বাড়ছে। সংসার থেকে স্বামী-স্ত্রী আলাদা হয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে তালাক হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- পরকীয়া, মাদকাসক্ত, চাকরি বা অন্য কিছুর সঙ্গে জড়িত হওয়া, সময় না দেওয়া, নির্যাতন, যৌতুক, মানসিক পীড়ন, বেপরোয়া জীবন, বদমেজাজ, সংসারে উদাসীনতা, অবাধ্য হওয়া, পুরুষত্বহীনতা, শারীরিক চাহিদায় অপূর্ণতা এবং সন্তান না হওয়া প্রভৃতি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর গত জুন মাসে প্রকাশ করা জরিপের ফল অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে তালাকের সংখ্যা বেড়েছে। গত এক বছরে তালাকের হার বেড়েছে ১.৪ শতাংশ। যা আগে ছিল ০.৭ শতাংশ। এ সময় ঢাকায় গড়ে ৪০ মিনিটের ব্যবধানে একটি করে তালাকের ঘটনা ঘটেছে
গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট তালাকের সংখ্যা সাত হাজার ৬৯৮টি। এর মধ্যে স্ত্রীর মাধ্যমে তালাক হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৮৩টি। স্বামীর মাধ্যমে তালাকের সংখ্যা দুই হাজার ৩১৫টি। ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় মোট তালাক হয়েছে ৬৫০টি। এর মধ্যে স্ত্রীর মাধ্যমে তালাকের ঘটনা ৪৫০টি আর স্বামীর মাধ্যমে ২০০টি। অর্থাৎ পুরুষের চেয়ে নারীরা তালাক বেশি দিয়েছেন।
অন্যদিকে, পূর্ণ তালিকা প্রস্তুত শেষ না হলেও খসড়া হিসাবে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৭০০টি করে তালাকের ঘটনা ঘটেছে। এখানেও তালাক প্রদানে এগিয়ে নারীরা।