চট্টগ্রামে মা-মেয়েকে জবাই করে খুন, যুবকের মৃত্যুদণ্ড
চট্টগ্রামে মা-মেয়েকে জবাই করে হত্যার দায়ে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আরও এক ব্যক্তিকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) চট্টগ্রামের ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক বেগম সিরাজাম মুনিরা এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— বেলাল হোসেন (২৬) ও টিটু সাহা (৪৫)। এরমধ্যে বেলালকে মৃত্যুদণ্ডসহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আলাদত। আর টিটু সাহাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার নথি পর্যালোচনা করে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট থানার দক্ষিণ নালাপাড়ায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন খাসির মাংস ব্যবসায়ী শাহ আলম। ২০১৫ সালের ৭ মে সকালে শাহ আলম দোকানে চলে যান। দুই ছেলেও স্কুলে চলে যায়। তখন ঘরে ছিল তার স্ত্রী নাছিমা বেগম ও মেয়ে রিয়া আক্তার ফাল্গুনী। সকাল পৌনে ১০টার দিকে শাহ আলমকে তার শ্যালক আলাল ফোন করে জানায় নাছিমা ও রিয়া খুন হয়েছেন। পরে তিনি ঘরে গিয়ে স্ত্রী-কন্যাকে মেঝেতে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। ঘরে থাকা ১ লাখ ১১ হাজার টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণালংকার ও ২টি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে যায় অজ্ঞাত খুনিরা। ঘটনার পরপরই পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শাহ আলম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে সদরঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৫ সালের ২৭ মে হত্যাকাণ্ডের দিন খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে খুন হওয়া শাহ আলমের খালাতো ভাই বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। খুন হওয়া নাছিমা বেগমের স্বর্ণালংকার নগরের বাকলিয়া ইসাহকের পুল এলাকায় একটি জুয়েলার্সের কর্মচারী টিটু সাহার কাছে বিক্রি করেছিল বলে জানায় বেলাল হোসেন।
পরে টিটু সাহাকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২০১৫ সালের ২৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন মাধ্যমে বিচার শুরু হয়। ১৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।
ট্রাইবুন্যালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট দীর্ঘতম বড়ুয়া জানান, হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এই মামলার রায়ে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় বেলাল হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে লুট করা স্বর্ণ কিনে নিজের হেফাজতে রাখায় দণ্ডবিধির ৪১১ ধারায় টিটু সাহাকে ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় দুইজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানামূলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।