গোলঘরে বসেই উপভোগ করা যাবে কর্ণফুলীর রূপ
গোলঘরে বসেই উপভোগ করা যাবে কর্ণফুলীর রূপ
রাঙামাটির কাপ্তাই সড়কের পাশে কর্ণফুলীর কূলঘেঁষে পাহাড়ের ঢালে তৈরি হয়েছে নিসর্গ পড হাউস। থাইল্যান্ডের আদলে বাঁশ, বেত, কাঠ ও ছন দিয়ে নির্মিত পড হাউসটি দেশে-বিদেশে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। ২০২২ সালের ২৫ নভেম্বর কাপ্তাই উপজেলার শিলছড়ি হাজিরটেক এলাকায় এটি স্থাপন করা হয়। এ বছরের ২৫ নভেম্বর পড হাউসটির একবছর পূর্ণ হবে। এই পর্যটনকেন্দ্র ইতোমধ্যে পর্যটকদের আর্কষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কর্ণফুলী নদীর কূলঘেঁষে তৈরি হওয়া নয়টি পড হাউসে রাত্রি যাপনের জন্য প্রতিদিন পর্যটকরা ভীড় করছেন। পর্যটকের চাপে আগাম বুকিং দিতে হিমশিম পোহাতে হয়। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের চাহিদাকে সামনে রেখে আগের নয়টি পড হাউসের পাশাপাশি আরো আধুনিকতার ছোঁয়া লাগিয়ে এক বছর পাঁচটি নিসর্গ প্রিমিয়াম পড হাউস গড়ে তোলা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোক ছাড়াও বেসরকারি এনজিও, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্বরা এ নিসর্গ পড হাউসের মনোরম দৃশ্য অবলোকন করতে আসছে।
কাপ্তাইয়ের তিনজন সন্তান তাদের বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে এ পড হাউজ চালু করে। এটি চালু হওয়ায় ১৫-২০ জন কর্মচারীর কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা হয়েছে। পড হাউজ যারা প্রতিষ্ঠা করেছেন তাদের একজন মো.নাছির উদ্দিন। তিনি কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়া মো. সরোয়ার হোসেন সমাজকর্মী ও ইউপি সদস্য। অন্যজন মো. আফছার উদ্দিন ব্যবসায়ী।
নিসর্গ রিভার ভ্যালির পরিচালক নাছির উদ্দিন বলেন, আধুনিকতার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও পর্যটকদের চাহিদাকে মাথায় রেখে আমরা আরো পাঁচটি প্রিমিয়াম পড হাউস নির্মাণ করছি। যার নামকরণ করা হয়েছে প্রিমিয়াম পড হাউস। এখানে প্রতিটি রুম তৈরি করা হচ্ছে কাঠ দিয়ে, প্রতিটি রুম হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। প্রতিটি রুমে কমপক্ষে ৪ জনের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি রুমের পাশে তৈরি করা হচ্ছে কাঠের গোলঘর। এই গোলঘরে বসে পর্যটকরা কর্ণফুলী নদীর দৃশ্য, সুউচ্চ পাহাড়, চা-বাগান অবলোকন করতে পারবেন। এছাড়া কায়াকিং, রাইডিং, ওয়াইফাই, বিদ্যুৎ, নেটে শুয়ে আকাশের তারা উপভোগ, রিলাক্সিং লাউন্স দক্ষ বাবুর্চি তত্ত্বাবধানে মজাদার খাবারসহ ব্যাপক নিরাপত্তা ও সিসি ক্যামেরা মিনিটরিং করার সুবিধা রয়েছে। মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন দৈনিক পূর্বকোণকে জানান, পর্যটন শহর কাপ্তাই ইতোমধ্যে পর্যটকদের কাছে দিন দিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। আমরা ইতিমধ্যে যে ৯টি পড হাউস তৈরি করেছি, সেগুলো পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। তাই বেশি সংখ্যক পর্যটক যাতে একসাথে রাত্রিযাপন করতে পারে সেজন্য নতুন করে প্রিমিয়াম পড হাউজ তৈরি করছি। আশা করছি নভেম্বরের শেষের দিকে এই প্রিমিয়াম পড হাউস পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
পড হাউজ ও রেস্তোরাঁ ম্যানেজার মাসুদ জানান, নিসর্গ পড হাউসে রাত্রিযাপনে প্যাকেজ দু’জন ৫ হাজার টাকা, ৩ জন ৬ হাজার টাকা করে। এবং প্যাকেজ অনুযায়ী তিনবেলা দুপুর, রাত ও সকালে ফ্রি খাওয়া ও ৩০ মিনিট কায়াকিং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রেস্তোরাঁয় আসলে সবসময় পাওয়া যাবে সাদাভাত, পোলাও, দেশি মুরগি, সোনালী, ফার্মের মুরগি, স্থানীয় নদীর মাছ, রুই, কাতল, বোয়াল, কোরাল মাছ। এছাড়া আলু ভর্তা, কাঁচকি মাছ বোড়া, শুঁটকি ভর্তা, আলু ভর্তা, টাকি মাছ ভর্তা ও চাপিলা ফ্রাইসহ হরেক রকমের সুবিধা রাখা হয়েছে।