চট্টগ্রামবন্দর

জাহাজের ওয়েভার সনদ জটিলতা কাটছেই না

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য পরিবহনে আসা বিদেশি জাহাজের ওয়েভার সনদ জটিলতা কিছুতেই কাটছে না। আদালত পর্যন্ত গড়িয়েও এর কোন সুরাহা হয়নি। এমনকি গত ৩১ জুলাই নৌপরিবহন অধিদপ্তরে ওয়েভার সনদ সংক্রান্ত বৈঠক ও তৎপরবর্তী ৩০ আগস্ট ওই বৈঠকের তিন সিদ্ধান্ত জানানোর পর জটিলতা আরও বৃদ্ধি পায় বলে জানিয়েছে শিপিং এজেন্টসগুলো।

এদিকে, ওয়েভার সনদ ইস্যু না হওয়ায় অনিশ্চয়তায় পড়ছে বিদেশি জাহাজগুলো। এতে জাহাজকে অলস বসে থেকে গুনতে হচ্ছে আর্থিক ক্ষতি। এছাড়া বিদেশি জাহাজগুলোর প্রিন্সিপাল কোম্পানির কাছে ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হওয়ায় ব্যবসায়িক জটিলতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সম্প্রতি ব্যবসা কমে যাওয়ায় অনেক বিদেশি শিপিং কোম্পানি তাদের জাহাজ বাংলাদেশ রুটে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে শিপিং বাণিজ্য হুমকির মধ্যে পড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল শুক্রবার এক্সপ্রেস ফিডার্স সূত্রে জানা যায়, এক্সপি ধাউলাগিরি জাহাজ গত ৯ তারিখ চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে বার্থ করে পণ্য খালাস

শুরু করে। জাহাজটি ইতোমধ্যে আমদানি পণ্য খালাস করে বহির্নোঙরে গিয়ে অপেক্ষায় রয়েছে।

কারণ এখন পর্যন্ত ওই জাহাজের রপ্তানি ওয়েভার সনদ মেলেনি। শুধুমাত্র আমদানি সনদ থাকায় জাহাজটি আমদানি পণ্য খালাস করতে পারলেও রপ্তানি ওয়েভার সনদ না পাওয়ায় এবার অলস বসে থাকতে হচ্ছে।

অন্যদিকে, এসওএল প্রমিস নামের আরেকটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে ভিড়ে গত ১১ অক্টোবর। পরদিন ১২ অক্টোবর জাহাজটির আমদানি পণ্য খালাস শেষ হয়। তবে সে জাহাজেরও রপ্তানি পণ্য বোঝাইয়ে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। কারণ নৌবাণিজ্য দপ্তর থেকে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে বন্দর ত্যাগের জন্য ১২ তারিখ সকাল ৮টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে রপ্তানি পণ্য বোঝাই করে জাহাজ ত্যাগ না করলে জাহাজটির ওয়েভার সনদ বাতিল করা হবে বলেও জানায় নৌবাণিজ্য দপ্তর। কিন্তু আমদানি পণ্য খলাস করতেই সময় শেষ হয়ে যায়।

জাহাজ সংশ্লিষ্টরা জানান, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে মাত্র ১১০টি রপ্তানি কনটেইনার বোঝাই করা গেছে। বাকি ৬০০ রপ্তানি কনটেইনার বোঝাই এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।

এছাড়া এক্সপি লোটস নামের একটি জাহাজ গত বৃহস্পতিবার বন্দরের জেটিতে আমদানি পণ্য নিয়ে ভিড়লেও জাহাজটিকে রপ্তানি ওয়েভার সনদ দেওয়া হয়নি। এমনকি কোন কারণও ব্যাখ্যা করা হয়নি। ফলে হয়তো জাহাজটিকে রপ্তানি পণ্য ছাড়াই চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যেতে হতে পারে।

এদিকে, আজ শনিবার এক্সপ্রেস নিলওয়ালা নামের একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে বার্থিংয়ের কথা রয়েছে। ওই জাহাজের জন্য রপ্তানি ওয়েভার সনদের আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত তা অনিশ্চিত বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

উল্লেখ্য, প্রায় ৭৫টি বিদেশি কনটেইনার জাহাজ বর্তমানে দেশের কনটেইনারবাহী পণ্যগুলোর প্রায় ৯০ শতাংশ বহন করে এবং ৮টি বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ বাকি ১০ শতাংশ পণ্য বহন করে। দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে কমপক্ষে ৫০% সমুদ্রবাহিত পণ্য বহন করা বাধ্যতামূলক করা হয় বাংলাদেশ পতাকাবাহী জাহাজ (স্বার্থ সুরক্ষা) আইন ২০১৯ এ। এরপর থেকেই শুরু হয় জটিলতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d