মহিবুল্লাহ হত্যার সমন্বয়ক ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ নুর কামাল গ্রেপ্তার
বহুল আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের সমন্বয়ক ও হত্যায় অভিযুক্ত নুর কামাল প্রকাশ ওরফে সমিউদ্দনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে রোববার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের কুতুপালং এলাকা থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্রসহ তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাবের একটি দল।
রোববার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঢাকা পোস্টকে জানান, রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডে সন্ত্রাসী সংগঠন আরসার কিলার গ্রুপের প্রধান মোস্ট ওয়ান্টেড নুর কামাল প্রকাশ ওরফে সমিউদ্দনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাকে গ্রেপ্তারে দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছিল র্যাবের একাধিক টিম ও গোয়েন্দা শাখা। শেষমেশ তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। এব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার ১-ইস্ট নম্বর লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৭ ব্লকে রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ মুহিবুল্লাহকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উখিয়ার কুতুপালংয়ের এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে রাত সোয়া ১০টার দিকে মুহিবুল্লাহ মারা যান।
৪০ বছর বয়সী এ রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ নামে পরিচিত ছিলেন। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু এলাকার স্কুলশিক্ষক মুহিবুল্লাহ পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ‘রোহিঙ্গাদের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস নামে একটি সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করে আলোচনায় আসেন তিনি। জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থায়ও রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর মহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ অজ্ঞাতপরিচয় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ২০২২ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ২৯ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন কক্সবাজারের জেলা দায়রা জজ আদালত।
এর আগে মহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ২৯ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। পুলিশের অভিযোগপত্রে ২৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এরমধ্যে ১৫ জন কক্সবাজার জেলা কারাগারে আছেন। অপর ১৪ জন ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন বলে সে সময় জানিয়েছিল পুলিশ। আসামি সবাই রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পুলিশের।