চার্জশিটের দেড় মাস পরও কাউন্সিলর জসিমের বিষয়ে নীরব চসিক
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল আলম জসিম। দুই মেয়াদে গত ৯ বছর ধরে উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি তিনি। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতিও; তবে জনপ্রতিনিধির চেয়েও চট্টগ্রামে ‘পাহাড়খেকো’ হিসেবেই বেশি পরিচিত এই কাউন্সিলর। তার বিরুদ্ধে ২ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হওয়ার পরেও কোনো এক অদৃশ্য জাদুবলে বহাল তবিয়তে আছেন এই কাউন্সিলর। এমনকি তার বিরুদ্ধে চসিকের গঠন করা তদন্ত প্রতিবেদনও শেষপর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি।
সর্বশেষ দেড় মাস আগে গত ৩০ আগস্ট বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও তার সফর সঙ্গীদের উপর হামলার মামলায় এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্র আদালতে গৃহীত হয়। তারপরেও এই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। যেখানে আইনানুয়ী ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগপত্র গৃহিত হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরখাস্ত করতে পারবে। অথচ রহস্যজনক কারণে অভিযোগপত্র জমার ৫০দিন পেরিয়ে গেলেও তাকে বরখাস্তের কোনো উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তরও।
এদিকে, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন-২০০৯’র দ্বিতীয় অধ্যায়ে সন্নিবেশিত মেয়র ও কাউন্সিলর সম্পর্কিত বিধানের ১২ নম্বর ধারার (১) উপধারা মোতাবেক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের মামলার অভিযোগপত্র (নম্বর ১৪১) আদালত কর্তৃক গৃহিত হওয়ায় সাময়িক বরখাস্তের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। অথচ আইন মানা হয়নি এই কাউন্সিলরের ক্ষেত্রে। যদিও দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনগুলোতে খুব অল্প সময়েই এই আইন বাস্তবায়ন করার নজির হয়েছে। এছাড়া গত ৯ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ, আকবরশাহ ও পাহাড়তলী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকেরা যৌথ স্বাক্ষর দিয়ে এই কাউন্সিলরকে বরখাস্তের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দরখাস্তও জমা দেয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) মামলার বাদিপক্ষের আইনজীবী মো. আখতার কবির চৌধুরী সিভয়েসকে বলেন, ‘ফৌজদারি অপরাধে পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র আদালতে গ্রহণের ৫০ দিনেও বরখাস্ত হয়নি চসিক কাউন্সিলর জসিম। তাইলে আইনের শাসন কোথায় থাকলো? আইন সবার জন্য সমান হলে তার (কাউন্সিলর জসিম) জন্য কেন না! চার্জশিট দেওয়া মানে তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে তাহলে আইন অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না এর জবাব কর্তৃপক্ষকেই দিতে হবে।’
একই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে চসিকের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির দায় করপোরেশন নিবে না। এক্ষেত্রে আমরা জিরো টলারেন্স। আমাদের রুলস রেজুলেশন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’