ফেসবুক লাইভে এসে সাতকানিয়ার এমপিকে চ্যালেঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যানের
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ফেসবুক লাইভে এসে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন এক ইউপি চেয়ারম্যান। প্রশাসন ছাড়া এলাকায় যেতে এবং সংসদ সদস্য পদ ছেড়ে ইউপি চেয়ারম্যান পদে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামার আহবান জানিয়েছেন তিনি। খেলতে চাইলে খেলার মতন খেলতে বলেছেন।
উপজেলার ৯ নম্বর ঢেমশা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল হক সুমন এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের বর্তমান আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা নেজামুদ্দিন নদভী।
এই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমান এমপি প্রশাসন ছাড়া যেমন এলাকায় যেতে পারবেন না, তেমনি সংসদ সদস্যপদ ছেড়ে ইউপি চেয়ারম্যান পদে তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও হেরে যাবেন।
জানা গেছে, গত ২০ অক্টোবর সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের ইছামতি মুহাম্মদীয় আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার জনসভার আয়োজন করা হয়। ওই সভায় বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু রেজা নদভী।
জনসভায় এমপি তার বক্তব্যে বলেন, এই পশ্চিম ঢেমশার বর্তমান চেয়ারম্যান আমাদের অনেক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। আমি পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক করছি। আমাদের কোনো নেতাকর্মীকে যদি ধরে, তাহলে অবস্থা বারোটা বাজবে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কাউকে ধরতে পারবে না। মামলাগুলো সব প্রত্যাহার করার নির্দেশনা দেব।
এ বক্তব্যের জবাব দিতে মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক লাইভে আসেন পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল হক সুমন। তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘আপনাদের অবগতির জন্য বলছি। চট্টগ্রাম-১৫ আসনের এমপি মহোদয় বিগত ২০ তারিখ আমার ইউনিয়নে গিয়ে আমার নামে প্রকাশ্যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য রেখে ক্ষান্ত হননি। উনি প্রকাশ্যে আরও বলেন- জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ সন্ত্রাসীকে চেয়ারম্যান ঘোষণা করেছেন। এমপি নদভী এই বক্তব্যের মাধ্যমে জনগণের রায়কে অসম্মান এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচন প্রক্রিয়া ও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা করেছেন।
চেয়ারম্যান সুমন আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আপনাকে মনোনয়ন দিয়েছেন বিধায় এতদিন আপনাকে সম্মান করেছি। বিগত দুই সংসদ নির্বাচনে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত করার জন্য এলাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু এমপি মহোদয় আমি আপনাকে একটা কথা বলতে চাই, আমি এই চেয়ারম্যানের চেয়ারে উড়ে এসে জুড়ে বসি নাই। আমি তৃণমূল থেকে উঠে আসা একজন মুজিব আদর্শের কর্মী এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আমি। আপনার সাহস থাকলে প্রশাসন ছাড়া আমার ইউনিয়নে আবার আসেন এবং আপনার এমপি পদ চলে গেলে আপনি আমার সাথে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেন। দেখি কিভাবে আপনি জিতেন। জনগণের কাছে আপনার অবস্থান কত নিম্নস্তরে সেটা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করে দেব, ইনশাআল্লাহ। আপনি মাইকে গলাবাজি না করে মাঠে আসেন। দেখেন কে জিতে। মাইকে গলাবাজি করে, মানুষকে অসম্মান করেন- এটা তো ভালো না। মানুষকে সম্মান করতে শিখুন, মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন। এতে দল ও আপনার মঙ্গল হবে। আপনি যদি খেলতে চান, তাহলে খেলার মতো খেলেন। খেলা হবে, ইনশাআল্লাহ। আর আমার সাথে চেয়ারম্যান নির্বাচন করেন। ইনশাআল্লাহ, দেখা হবে মাঠে।
পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল হক সুমন যুগান্তরকে বলেন, এমপি সাহেব যে মামলার কথা বলছেন সেটি পুরোপুরি ভুয়া ও মিথ্যা। আমি কোনো মামলা করিনি। যে মামলার বাদী তিনি তাঁতী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যারা তাকে গুলি ও মারধর করেছে তাদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা করেছেন। এখানে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।