আন্তর্জাতিক

গাজায় ‘মানবিক’ বিরতির যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব জাতিসংঘে বাতিল

যুদ্ধ বিরতির বিপরীতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ‘মানবিক বিরতি’র যে প্রস্তাব জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে উত্থাপন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, তা রাশিয়া ও চীনের আপত্তির কারণে বাতিল হয়ে গেছে।

স্থানীয় সময় বুধবার এ প্রস্তাবটি বাতিল ঘোষণা করা হয়।

এর আগে গত ১৬ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে গাজায় ত্রাণ ও জরুরি পণ্য সরবরাহের সুবিধার্থে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া।

তবে অপর দুই স্থায়ী সদস্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের আপত্তির কারণে সেই প্রস্তাব পাস হতে পারেনি।

তারপর পরিষদের গত শনিবারের বৈঠকে ইসরায়েল ও হামাসের চলমান এই যুদ্ধ নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই প্রস্তাবের বক্তব্য ছিল- ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে এই ইরান যেন হামাসকে অস্ত্র প্রদান বন্ধ করে- সে লক্ষ্যে ব্যবস্থা নেয়া। গাজায় মানবিক বিরতির ব্যাপারটি সেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল না।

ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর হামলায় প্রতিদিন যেখানে শত শত শিশু-নারী ও বেসামরিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হচ্ছে, সেখানে ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের’ পক্ষে সাফাই দেয়ায় স্বাভাবিকভাবেই খসড়া প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি নিরাপত্তা পরিষদের অধিকাংশ সদস্য। তারপর পরিষদের মঙ্গলবারের বৈঠকে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ ও মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেয়ার জন্য গাজায় ‘মানবিক বিরতি’ ঘোষণার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে চূড়ান্ত প্রস্তাব তোলে যুক্তরাষ্ট্র।

বুধবার সেই প্রস্তাবের ওপর ভোট গ্রহণ হয়। এই পর্বে শুরুতেই এতে ভেটো বা আপত্তি জানায় নিরাপত্তা পরিষদের দুই স্থায়ী সদস্য চীন এবং রাশিয়া। জাতিসংঘের রুশ প্রতিনিধি ভাসিলি নেবেনজিয়া তার বক্তব্যে বলেন, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে আসলে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য স্থল অভিযানের পরিবেশ সৃষ্টির কাজ করা হচ্ছে। যেখানে বিমান হামলায় গাজায় প্রতিদিন শত শত ফিলিস্তিনি নিহত হচ্ছেন, সেখানে নিরাপত্তা পরিষদ এই যুদ্ধকে আরও বিস্তৃত করার অনুমোদন দিতে পারে না।

আর জাতিসংঘের চীনা প্রতিনিধি ঝ্যাং জুন বলেন, পুরো বিশ্ব গাজায় আল আকসা অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি ও সংঘাতের অবসান চাইছে। এই প্রস্তাবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতে কেবল কূটনৈতিক কোনো পদক্ষেপ নয়, বরং সেখানে বসবাসরত লাখ লাখ মানুষের জীবন-মরণ এর সঙ্গে সম্পর্কিত।

তবে রাশিয়া ও চীনের আপত্তি সত্ত্বেও ভোটপর্বে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যরাষ্ট্রের মধ্যে ১০টি এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত বিপক্ষে ভোট দিয়েছে এবং ব্রাজিল ও মোজাম্বিক ভোটদান থেকে বিরত থেকেছে।

ভোটপর্ব শেষে জাতিসংঘের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি লিন্ডা থমাস গ্রিনফিল্ড চীন ও রাশিয়ার ভেটোতে হতাশা জানিয়ে বলেন, আমরা আপনাদের সবার কথা শুনেছি। আমাদের আজকের প্রস্তাব পাস হলো না, তবে আমরা হাল ছেড়ে দিই দিইনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d