কিশোরগঞ্জে ট্রেন দূর্ঘটনা, লাশের প্যাকেট খুলেই চিৎকার করে উঠল আরমান
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ২৩ অক্টোবর আন্তনগর ট্রেন এগারসিন্দুরের ওপর এসে আছড়ে পড়ে একটা মালবাহী ট্রেন, বগি উল্টে মারা যায় ১৮ যাত্রী। আহত হয় শতাধিক। এই এগারসিন্দুরেরই যাত্রী ছিলেন দুই ভাই।
বগিতে পাশাপাশি অবস্থান করা দুই ভাইয়ের মধ্যে আফজাল হোসেন মারা যান। সুমন মোল্লার কাছে মর্মান্তিক সে ঘটনার বয়ান দিলেন আরেক ভাই সাদ্দাম হোসেন
১৫ বছর হয় বাইরে থাকি। দুই বছর ধরে আছি সৌদি আরব। ছুটিতে দেশে এসেছিলাম। গত সোমবার ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। আমার চলে যাওয়ার কথা শুনেই ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছিল আফজাল। ঢাকা কলেজে অর্থনীতিতে মাস্টার্স করছে ও। মানুষের প্রয়োজনে নিজের শরীরের রক্ত দেওয়া তার নেশা। এলাকায় মানুষ তাকে ‘রক্ত সৈনিক আফজাল’ নামেই চেনে বেশি।
দুই ভাই নিরাপদে যেন বিমানবন্দরে ফিরতে পারি, তাই মাইক্রোবাস না নিয়ে ট্রেনে যাওয়া ঠিক করি। পৌনে ১০টায় ফ্লাইট। তাই দ্রুত ভৈরবের রাধানগরের বাসা থেকে স্টেশনে যাই। সময়মতো চলে আসে এগারসিন্দুর, সময়মতোই ছাড়ে।
শেষ বগির টয়লেটের পাশে আমাদের সিট, নম্বর ৫৩-৫৪। আমি ৫৩ নম্বর সিটে বসে পড়ি। আফজাল তখনো বসতে পারে নাই। আমার গা ঘেঁষে দাঁড়াইছে। ভেতরে মানুষ আর মানুষ। এই এক বগির ভেতরই মনে হয় সিট ছাড়া লোক আছে ১০০। দরজার কাছেও অনেকে দাঁড়ানো। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে ট্রেন। হঠাৎ ধুম করে একটা শব্দে বগিটা উল্টে যায়। সবাই এক পাশে এসে পড়ে। একজনের ওপর আরেকজন। কোনোভাবেই উঠতে পারছি না। চিৎকার চেঁচামেচিতে কান তালা যায়। শ্বাস নিতে পারছিলাম না। দম বন্ধ হয়ে আসতেছিল। মনে হইতেছিল এখনই মারা যামু। ওই সময় ভেতর থেকে কে আমাকে বের করে আনল, বলতে পারুম না।