এবার চোখ দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে
তলদেশ ছুঁয়ে খরস্রোতা কর্ণফুলী নদী পাড়ি দেওয়ার স্বপ্ন এখন বাস্তব।চালু হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল।এবার সবার চোখ সরকারের আরেক বড় প্রকল্প দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে।
ট্রেনে চড়ে সৈকতের শহর কক্সবাজার যাওয়ার যে স্বপ্ন ভ্রমণপ্রিয় মানুষ এতোদিন ধরে দেখে আসছিলেন-দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সেটিও বাস্তবে রূপ নিচ্ছে আর কয়েক দিন পর।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামের যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়নে নেওয়া সবচেয়ে বড় এ প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আগামী ৭ নভেম্বর দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে ট্রেনের প্রথম ট্রায়াল রান হবে।এদিন রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ট্রায়াল রানের ট্রেনে চড়ে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার যাবেন। সফল ট্রায়াল রান শেষে আগামী ১২ নভেম্বর একশ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেললাইন উদ্বোধনের কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।
দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণ প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম চৌধুরী পূর্বকোণকে বলেন, দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একশ কিলোমিটার মেইন লাইন বসানোর কাজ শেষ। কক্সবাজার প্রান্তে দেশের সবচেয়ে আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনও এখন অপারেশনাল কার্যক্রমের উপযোগী। বাকি স্টেশন ও লুপ লাইনের নির্মাণকাজ দ্রুত সময়ে শেষ করার কাজ চলছে। পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৯২ শতাংশ।
তিনি বলেন, লুপ লাইন এবং কিছু স্টেশনের কাজ পুরোপুরি শেষ না হলেও দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইনে এখন ট্রেন চলাচল করানো যাবে। সংস্কার শেষে কালুরঘাট সেতু ট্রেন চলাচলের উপযোগী হয়ে উঠলে আগামী ৭ নভেম্বর এ রুটে ট্রেনের ট্রায়াল রান হবে। আগামী ১২ নভেম্বর স্বপ্নের এ প্রকল্প উদ্বোধনের কথা রয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করবেন।
তবে ১২ নভেম্বর উদ্বোধন হলেও বাণিজ্যিকভাবে এ রুটে ট্রেন চলতে আরও কিছু সময় লাগবে। প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে দুই জোড়া এবং ঢাকা থেকে এক জোড়া ট্রেন আসা-যাওয়া করবে এ রুটে। চট্টগ্রাম থেকে তিন ঘণ্টা ২০ মিনিট এবং ঢাকা থেকে আট ঘণ্টা ১০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে এসব ট্রেন। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশনে দাঁড়াবে। আর চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনগুলো মাঝপথে কয়েকটি স্টেশনে দাঁড়াবে।
সূত্র জানায়, ঢাকা থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেনটি রাত সাড়ে ১০টায় ঢাকা ছেড়ে পরদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজার পৌঁছাবে। দুপুর ১টায় পুনরায় ঢাকার উদ্দেশ্যে কক্সবাজার ছেড়ে রাত ৯টা ৫ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেনগুলোর মধ্যে একটি সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম ছেড়ে সকাল ১০টা ২০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। অন্যটি বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম ছেড়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কক্সবাজার পৌঁছাবে।
প্রসঙ্গত ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। তবে অর্থ সংস্থান না হওয়ায় এ সময় কাজ আটকে যায়। পরে এডিবির সঙ্গে চুক্তির পর সরকার ও এডিবি মিলে এই প্রকল্পে জন্য ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থের জোগান দেয়। ২০১৮ সালে ডুয়েলগেজ সিঙ্গেল ট্র্যাকের এ রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এ প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।